শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

তীব্র শীতে উত্তরের জনজীবন বিপর্যস্ত, দুর্ভোগে নিম্নআয়ের মানুষ

জেলা প্রতিনিধি, রংপুর
প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৩ পিএম

শেয়ার করুন:

তীব্র শীতে উত্তরের জনজীবন বিপর্যস্ত, দুর্ভোগে নিম্নআয়ের মানুষ
তীব্র শীতে উত্তরের জনজীবন বিপর্যস্ত

রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা ও ঘন কুয়াশার দাপট বেড়েই চলছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। যার ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে উত্তরের জনপদ। এতে চরম ভোগান্তি আর দুর্ভোগে পড়ছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। উত্তরের জেলাগুলোতে আরো তাপমাত্রা কমবে বলে জানিয়েছে রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আর বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় জেলাগুলোতে শীত আর ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে গেছে। এর মধ্যে আবহাওয়ার উন্নতি হলেও সামনে আবহাওয়ার কিছুটা অবসতি ঘটবে। শুক্রবার রংপুরে তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


বিজ্ঞাপন


আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ অঞ্চলের জেলায় ভিত্তিক সকাল ১০টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে— পঞ্চগড়ের তেতুলয়া ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, নীলফামারির সৈয়দপুরে ১৩ দশমিক ০ ডিগ্রি, রংপুরে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি, নীলফামারী ডিমলায় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি, দিনাজপুর ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, লালমনিরহাট ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি ও গাইবান্ধায় ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

thumbnail_Rangpur_photo3

রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম রাজারহাটের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আরও তিন-চার দিন এই অঞ্চলের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।

রংপুরের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তীব্র শীত ও বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে শীত আর ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে গেছে। তবে এর মধ্যে আবহাওয়ার উন্নতি হলেও সামনে আবারও আবহাওয়ার কিছুটা অবনতি ঘটবে।


বিজ্ঞাপন


তীব্র শীতে বেশি ভোগান্তি আর দুর্ভোগে পড়ছেন শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। ঘন কুয়াশা এবং হিমেল বাতাসে জীবনযাত্রা প্রায় অচল করে দিয়েছে তাদের। বেশিরভাগ গ্রাম ও চরাঞ্চলের মানুষের অবস্থা তীব্র শীতের দাপটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলে আলু ও সবজি খেতে এই ঘন কুয়াশায় কাজ করা দুস্কর হয়ে পরেছে। তবে জরুরি প্রয়োজনে বেলা বাড়লে বিশেষ করে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কোন মতে কাজ সারছেন।

Rangpur_photo2

রংপুর নগরীতে আসা অটোরিকশাচালক রমজান মিয়া বলেন, গত তিন চার দিন ধরে রংপুরে তীব্র শীত যাত্রী ও কাজ নেই বলে চলে। রাতে ঘন কুয়াশা বৃষ্টির মতো পড়ে। এর ফলে ঘর থেকে নেহাত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বের হচ্ছে না। যার কারণে আয় রোজগার কম পরিবারের নিয়ে অনেক কষ্টে দিন যাপন করতে হচ্ছে।

কাচারী বাজারের কোট এলাকার পান দোকানদার আব্দুর রহিম বলেন, বেশি ঠান্ডার কারণে লোকজন কম। তাছাড়া ডিসেম্বর মাসে কোর্টে মামলার কাজ কম হয়, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে তীব্র শীত সবমিলিয়ে লোকজন শহরে কম থাকায় বিক্রি কম।

thumbnail_Rangpur_photo4

এদিকে, কনকনে ঠান্ডায় সর্দি, হাঁচি-কাঁশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে কয়েকগুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে। যার ফলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ চিকিৎসা নিতে আসছেন।

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান বলেন, শীতের তীব্রতা বাড়ায় সর্দি, হাঁচি-কাঁশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্করা। যার কারণে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ চিকিৎসা নিতে আসছেন। ফলে শিশু ওয়ার্ডে একুট চাপ বাড়ছে। এজন্য বিশেষ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসান বলেন, জেলায় হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষের মাছে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে রংপুর জেলায় ২০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। শীতের প্রকোপ বাড়ায় এ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে আরো শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে। তবে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেও শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো দরকার। সকলের সহযোগিতা দরকার শীতার্ত মানুষের শীত নিবারণের জন্য।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর