শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলেছে রের্কড ৩৫ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

জেলা প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৩ এএম

শেয়ার করুন:

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলেছে রের্কড ৩৫ বস্তা টাকা, চলছে গণনা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলেছে রের্কড ৩৫ বস্তা টাকা

কিশোরগঞ্জ শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীর তীরের হারুয়া এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে ১৩টি লোহার দানবাক্স রয়েছে।

যা আজ ৩ মাস ২৮ দিন পর শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় এ দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে। এতে পাওয়া গেছে রেকর্ড ৩৫ বস্তা টাকা।


বিজ্ঞাপন


মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, পার্শ্ববর্তী জামিয়া এমদাদিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী, রূপালী ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মাচারীসহ প্রায় ৫ শতাধিক জনের একটি দল এই ৩৫ বস্তা টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার দানবাক্স খোলার সময় পার হয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত তিনটি টিনের বাক্স বাড়ানো হয়েছে।

thumbnail_1000129718

এর আগে চার মাস ১৮ দিন পর চলতি বছরের ৩০ আগষ্ট পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলে রেকর্ড ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকা পাওয়া যায়। এছাড়াও পাওয়া গিয়েছিল বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মো. এরশাদুল আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।


বিজ্ঞাপন


কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা ও পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেনের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এছাড়াও এ সময় বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

thumbnail_1000129734

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা জানান, এবার ৩ মাস ২৮ দিন পর আজ শনিবার সকালে পাগলা মসজিদের ১০টি লোহার দান সিন্দুকসহ অতিরিক্ত ৩টি টিনের ট্রাঙ্ক খোলা হয়েছে। এতে রেকর্ড ৩৫ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। পরে মসজিদের দোতালায় এনে টাকা গণনার কাজ শুরু হয়েছে। ৩ মাস পর পর দানবাক্সগুলো খোলা হলেও এবার ৩ মাস ২৮ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে। তাই এবার ৩টি টিনের ট্রাঙ্ক বাড়ানো হয়েছিল। আশা করা যাচ্ছে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে।

মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়।

 

মসজিদটিকে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে ‘পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স’। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ কোটি টাকা। সেখানে ৬০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

প্রসঙ্গত, গত ১০ আগস্ট রোববার সকালে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্ঠা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, খুব শিগগিরই দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদের ১০ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আধুনিক তুরস্কের নকশায় বহুমুখী কার্যক্রম সম্পাদনের উপযোগী ইসলামিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে।

thumbnail_1000129714

তিনি আরও বলেন, পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে পাওয়া সব টাকা মসজিদের ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এফডিআর হিসেবে রাখা আছে, যা থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ গরিব, অসহায়, অনাথ ও অসুস্থদের জন্য ব্যয় করা হয়।

এসময় তিনি প্রস্তাব করে বলেন, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে এই তহবিল থেকে সহায়তা দেওয়ার। এতে শিক্ষার সুযোগ বাড়বে।

উপদেষ্ঠা আশা প্রকাশ করে বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের মেয়াদের মধ্যেই দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদের ১০ তলা ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর