মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

দুর্গ উদ্ধারে মরিয়া রংপুরের জাতীয় পার্টি: ৬ আসনেই প্রার্থী চূড়ান্ত

রেজাউল করিম জীবন, রংপুর
প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩৯ পিএম

শেয়ার করুন:

দুর্গ উদ্ধারে মরিয়া রংপুরের জাতীয় পার্টি: ৬ আসনেই প্রার্থী চূড়ান্ত

একসময় রংপুর পরিচিতি ছিল ‘লাঙ্গলের ঘাঁটি’ হিসেবে। সেই ঘাঁটি ধরে দীর্ঘদিন বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলকে দুর্ভেদ্য দুর্গ হিসেবেই বিবেচনা করত জাতীয় পার্টি। কিন্তু বিগত সময়ে সেই দুর্গে হানা দেয় পতিত আওয়ামী লীগ। ফলে এ অঞ্চলের দুই-তৃতীয়াংশ সংসদীয় আসনই হাতছাড়া হয় জাপার। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না এমন শঙ্কা তৈরি হলে যতটুকু অবশিষ্ট ছিল সেটাও নিয়ে সংশয় ছিল জাতীয় পার্টির। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সেই সংশয় কেটে গেছে ইতোমধ্যে। ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে জাতীয় পার্টি। রংপুর ৩ সদর আসনে দলটির চেয়ারম্যানের মনোনয়ন ফরম উত্তোলনের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করে জাতীয় পার্টি। এর দুইদিন পরেই রংপুরের ৬টি সংসদীয় আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করে জাপা। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মতো এতদিন আড়ালে থাকলেও মনোনয়ন সংগ্রহের মাধ্যমে আবারও অনেকটাই উজ্জীবিত তৃণমূল। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই সরব হয়ে উঠেছে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্গ উদ্ধারে জনপ্রিয় এবং পরিচিতদের দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। রংপুর-১ (গংগাচড়া) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার মঞ্জুম আলী, রংপুর-২ (তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ) আসনে সাবেক এমপি আনিসুল ইসলাম মণ্ডল, রংপুর-৩ (সদর) আসনে গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের), রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসের মো শাহ মাহবুবুর রহমান, রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে শিল্পপতি এস এম ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর ও  রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে নুর আলম যাদু।


বিজ্ঞাপন


এদিকে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের জোটবদ্ধ সঙ্গী হিসেবে জাতীয় পার্টিকে দোসর আখ্যা দেয় জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা শক্তি। যদিও জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার পক্ষে মাঠে ছিল জাতীয় পার্টি। এরমধ্যে রংপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জাতীয় পার্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করে। জাতীয় পার্টির কয়েকজনকে জেলেও যেতে হয় ওই সময়। যার কারণে তৎকালীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভর্ৎসনা করা হয় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই অনেকটাই উজ্জীবিত হয়ে ওঠে তৃণমূল। নির্বাচনের মাঠে সরব হয়ে উঠেছে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।

রংপুর-১ (গংগাচড়া) আসনে জাতীয় পার্টির দলীয় মনোনয়ন পেয়ে উজ্জীবিত ব্যারিস্টার মঞ্জুম আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গংগাচড়াবাসী স্থানীয় কোনো সংসদ সদস্য পাননি। স্থানীয় সংসদ সদস্য না থাকায় এলাকার মানুষের মনের কথাও তারা বুঝতে পারেননি। যার কারণে পরিকল্পিত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এই গংগাচড়ায়। তাই গংগাচড়ার মানুষ এবারে স্থানীয় প্রার্থী প্রত্যাশা করেছিলেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ (জিএম কাদের) কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিষয়টি অনুধাবন করে এবারে স্থানীয় প্রার্থী হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমিও আশাবাদি। আসনটি জাতীয় পার্টিকে উপহার দিতে চাই। এসময় তিনি গংগাচড়া বাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন।

এসব বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলার সভাপতি আজমল হোসেন লেবু বলেন, বৃহত্তর রংপুর অঞ্চল বরাবরই জাতীয় পার্টির ঘাঁটি। এখনও সেই ঘাঁটি অক্ষুন্ন রয়েছে। জাতীয় পার্টি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঘাঁটি উদ্ধারে এলাকার মধ্যে জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন দিয়েছেন। মনোনয়ন পেয়ে প্রার্থীরা মাঠে কাজ শুরু করে দিয়েছে। মাঠের সাড়া ভালো পাওয়া যাচ্ছে। সবাই মুখিয়ে আছে ভোট দেওয়ার জন্য। আমরাও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সাধ্যমতো দলীয় প্রার্থীদের জয়ী করতে চেষ্টা করব। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আবারো জাতীয় পার্টি স্বগৌরবে হারানো আসন ফিরে পাবে আমরা আশাবাদি।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর