নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বাবরুকপুর গ্রামে প্রবাসী মো. জহিরুল ইসলাম লিটনের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
সৌদি প্রবাসী লিটন বাংলাটিভির বন্দর ও সোনারগাঁও প্রতিনিধি এবং দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ ও ঢাকা মেইলের সোনারগাঁও প্রতিনিধি হাজী মো. শফিকুল ইসলামের শ্যালিকা রণি আক্তারের স্বামী।
বিজ্ঞাপন
এ ব্যাপারে প্রবাসীর স্ত্রী রণি আক্তার বাদি হয়ে সোনারগাঁও থানায় ও এসপি কার্যালয়ে সোমবার একটি অভিযোগ দায়েন করেছেন। অভিযোগের পর নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-বি) ইমরান আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার জন্য সোনারগাঁও থানার ইন্সপেক্টর সামিরুলকে পাঠান।
অভিযোগপত্রে প্রবাসীর স্ত্রী উল্লেখ করেন, রোববার (২১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ঢাকা-চট্গ্রাম মহাসড়কের সোনাখালী বাসস্টেন্ডের পাশে বাবরুকপুর গ্রামে র্যাংকস গ্রুপের দক্ষিণ গেটের পাশে তার বাড়িতে একদল ডাকাত অস্ত্রসহ হানা দেয়।
মাস্ক পড়া ডাকাত দলের ৫/৬ জন সদস্য তাদের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তাকে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের গলায় ধারালো ছুরি ধরে আলমারীতে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকা, ৫ স্বর্ণালংকার ও কয়েকটি স্মার্ট মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
এ সময় তারা ভয়ে ডাক-চিৎকার শুরু করিলে ডাকাতরা তাদের কিল-ঘুষি ও থাপ্পর মেরে সঙ্গে থাকা ছুরি, চাপাতি, রাম দা ও অন্যান্য ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয় যে, কোন বাড়াবাড়ি ও চিৎকার-চেচামেচি করলে হত্যা করে ফেলবে।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সোনারগাঁওয়ের মোগড়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। একদিন আগেও সোনাখালী এলাকা থেকে ৪ ডাকাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ১৪ ডিসেম্বর মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কালীগঞ্জ গ্রামের বাদশা মিয়ার গ্যারেজ থেকে তিনটি অটোরিকশা চুরি হয়। ওই ঘটনায় ইলিয়াসদী গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে নুরুল হক থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও আটোরিকশা এবং চোরের কোনো হদিশ মিলেনি।
কয়েক মাস আগে ভাগলপুর গ্রামের বাহাউদ্দিনের গ্যারেজ থেকে একই ভাবে ৫টি অটোরিকশা চুরি হয়। পরে গ্রামবাসী এলাকার চিহ্ণিত চোর ভাগলপুর গ্রামের হেলালউদ্দিনের ছেলে সিফাতকে (২২) ধরে জিজ্ঞেশ করলে সে জানায়, আড়াইহাজার এবং নরসিংদী থেকে কয়েকজন ডাকাতকে ভাড়ায় এনে সে ওই গ্যারেজ থেকে অটো চুর করেছে। একটা সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন গ্যারেজে এভাবে ডাকাত ভাড়া করে অটো চুরি করছে।
সিফাতের ওই স্বীকারোক্তিমূলক জবানব্দি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। তার বিরুদ্ধে মামলা হলেও এখন পর্যন্ত তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা বহাল তবিয়তে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
শুধু তাই নয়, গ্যারেজ মালিকের ছেলে রানাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য সিফাত ও তার চাচাতো ভাই (মহিউদ্দিনের ছেলে) মেরাজ (২৫) ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাড়া করেছে।
এ ছাড়া, সম্প্রতি ভাগলপুর ও মাধবপুর এলাকায় কিশোর গ্যাং, মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে একটি গ্যাং এর নেতৃত্ব দেয় খোনকারবাড়ি এলাকার খোড়া উজ্জ্বল।
কয়েক মাস আগেও এ যুবক দিনমজুরের কাজ করতো। এখন নিজেকে নেতা দাবি করে এলাকায় চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
এ ব্যাপারে সার্কেল এসপি ইমরান আহমেদ দ্রুত ওই দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন। সোনারগাঁও থানার ইন্সপেক্টর সামিরুল জানান, অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান চলছে।

