বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ‘দায়মুক্তি আইন’-এর আওতায় সম্পাদিত সব বিনিয়োগ ও ক্রয় চুক্তি বাতিল এবং এ খাতের অপরাধীদের বিচারের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর জিরো পয়েন্টে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), রাজশাহী জেলা শাখার উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
বিজ্ঞাপন
ক্যাব রাজশাহীর সহ-সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মোস্তাফা মামুনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ক্যাব উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার খাদেমুল ইসলাম, দৈনিক সোনালী সংবাদের সম্পাদক লিয়াকত আলী, শিক্ষা সুরক্ষা কমিটি রাজশাহীর সহ-সভাপতি ওবায়দুর রহমান এবং ক্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমরম। এছাড়াও বক্তব্য দেন দফতর সম্পাদক কবি অম্লান অনিরুদ্ধ, ক্যাব পবা উপজেলার সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম, ক্যাব ইয়ুথ গ্রুপের সভাপতি জুলফিকার হায়দর, সাবেক কাউন্সিলর সাগরিকা এবং ক্যাব ইয়ুথ গ্রুপ রাজশাহী কলেজ শাখার সভাপতি শরিফুল ইসলাম সৌরভসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সভাপতির বক্তব্যে মিজানুর রহমান বলেন, ‘দায়মুক্তি আইন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতি ও লুটপাটকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। এই আইনের সুযোগ নিয়ে জনগণের অর্থে করা বহু চুক্তি জনস্বার্থবিরোধী ও অস্বচ্ছ। জনগণের অর্থে গড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মুনাফার ক্ষেত্র হতে পারে না। দায়মুক্তির সংস্কৃতি বাতিল করে সব বিতর্কিত বিনিয়োগ ও ক্রয় চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন এবং জনস্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলো দ্রুত বাতিল করতে হবে।’
ক্যাব সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মোস্তাফা মামুন বলেন, ‘কস্ট প্লাস’ পদ্ধতির নামে ভোক্তাদের ওপর বারবার মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপানো হয়েছে। অথচ এর দায় কেউ নেয়নি। সরকারকে মুনাফামুক্তভাবে কেবল উৎপাদন খরচের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেবা দিতে হবে। কারণ এটি বিলাসপণ্য নয়, মানুষের মৌলিক প্রয়োজন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, দায়মুক্তি আইনের কারণে গত কয়েক বছরে বিদ্যুৎ খাতে সুশাসনের অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। এসব চুক্তির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা বা দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। তারা দাবি জানান, সরকার যেন যৌথ মালিকানায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবসায় জড়িত না হয় এবং সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ব্যক্তি খাতে হস্তান্তর না করে। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনে তরল জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
বিগত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আত্মসাৎকৃত অর্থের পূর্ণাঙ্গ হিসাব নিরূপণ করে দায়ীদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবি জানান বক্তারা। একই সঙ্গে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে ‘এনার্জি প্রাইস স্ট্যাবিলাইজড ফান্ড’ গঠন এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আইন ২০০৩-এর মৌলিক সংস্কারের আহ্বান জানানো হয়। ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানান ক্যাব নেতারা।
প্রতিনিধি/একেবি

