সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

রাজবাড়ীতে জমে উঠেছে পুরাতন শীতবস্ত্রের বেচাকেনা

কাজী তানভীর মাহমুদ, রাজবাড়ী
প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩৬ এএম

শেয়ার করুন:

রাজবাড়ীতে জমে উঠেছে পুরাতন শীতবস্ত্রের বেচাকেনা
জমে উঠেছে পুরাতন শীতবস্ত্রের বেচাকেনা

অগ্রহায়ণ মাসে প্রকৃতিতে হেমন্তকালের আধিপত্য থাকলেও এখনই জেঁকে বসেছে শীত। এই সময়টাকে কাজে লাগাচ্ছেন রাজবাড়ীর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। শহরে রেললাইনের মাঝেই শীতের পুরাতন কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তারা। বিকেলে ভিড় জমে যায় দোকানগুলোতে। ক্রেতা বিক্রেতার দরদামে চলে বেচাকেনা। অস্থায়ী দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে কোরিয়া, জাপান, চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া থেকে আসা কম দামি ও ট্রেন্ডি শীতবস্ত্র। দামে কম মানে ভালো হওয়ায় ক্রেতাদের ভিড় দিন দিন বাড়ছে।

রাজবাড়ী নিউ কলোনির বাসিন্দা মো. আল আমিন খোকন বলেন, দিন শেষে সন্ধ্যা নামলে বেড়ে যায় বেচাকেনা। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের জন্য শীতবস্ত্র পাওয়া যায় এসব দোকানগুলোতে। ১শ থেকে ৫শ টাকায় সোয়েটার আর ৩শ থেকে দেড় হাজার টাকায় জ্যাকেট মেলে এখানে। সাধারণত নিস্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষেরাই এই বাজারের প্রধান ক্রেতা। নিজেরা দেখে শুনে পছন্দমত শীতবস্ত্র কিনতে পারেন ক্রেতারা।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_PXL_20251127_061325158

আরেক ক্রেতা রাসেল মিয়া বলেন, আমারা নিম্নআয়ের মানুষ, তাই েই মার্কেটে বাচ্চার জন্য শীতের পোশাক কিনতে এসেছি।

মৌসুমি আক্তার নামে আরেক ক্রেতা বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর পোশাকের মান অনুযায়ী কিছু কিছু জায়গায় টাকার পরিমাণটা কম আবার কিছু কিছু জায়গায় পোশাকের তুলনায় টাকা পরিমাণ বেশি। তাছাড়া এবছর তুলনামূলক একটু দাম কম। আমি একজন গৃহবধূ। আমার পোশাকসহ আমার ভাগিনা ও ভাগনির জন্য শীতের পোশাক কিনতে এসেছি। এখানে শীতের পোশাকের দাম তুলনামূলক কম আছে।

আরেক ক্রেতা শরিফা বেগম বলেন, এবার আগে থেকেই শীত অনুভূত হচ্ছে। তাই গরম কাপড় কিনতে এসেছি। স্তূপ থেকে পছন্দের কাপড় খুঁজে নিচ্ছি। এখানে খুব কম টাকায় ভালো জিনিস পাওয়া যায়। তবে এবছর দাম তুলনামূলক একটু বেশি। আমার ধারণা, শীত আরও বাড়লে কাপড়ের কিছু আমদানি হলে দাম কিছুটা কমতে পারে।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_PXL_20251127_062441162

বিক্রেতা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, শীতের শুরুতেই আমরা শীতকালীন পোশাক বিক্রি শুরু করেছি। চলতি সপ্তাহে শীতের প্রকোপ কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় দোকানগুলোতে এখন ক্রেতার ভিড় বেড়েছে। ফুটপাতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে শিশুদের শীতের পোশাক। এছাড়া জ্যাকেট, সোয়েটার ও বিভিন্ন ধরনের গেঞ্জি কিনছেন ক্রেতারা।

বিক্রেতা মো. গোলাম গাউস বলেন, দোকানে বয়স্কদের সোয়েটার, কোট, মাফলারসহ ছোটদের বিভিন্ন সাইজের শীতের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। অনেক জায়গায় হাঁকডাক করে এসব কাপড় বিক্রি করছেন হকাররা। মেয়েদের সোয়েটার মান ভেদে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, ছেলেদের জ্যাকেট ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, ছোটদের বিভিন্ন পোশাক ৫০ থেকে ৪০০ টাকা, মাফলার ৪০ থেকে ১৫০ টাকা এবং গরম টুপি ৫০ থেকে ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

thumbnail_PXL_20251127_061048153

বিক্রেতা মো. শহীদ বলেন, কমদামে ক্রেতাদের কাছে ভালো মানের পোশাক বিক্রি করে আমরা খুশি। গাইট কিনে এনে এখানে বিক্রি করি। ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত দামের শীতের গরম পোশাক পাওয়া যায়। মানও বেশ ভালো। এখানে সবধরনের ক্রেতারাই আসেন। সামনে শীত বাড়লে বেচাবিক্রি আরও বাড়বে। এ মার্কেটে শীতের কাপড়ের দোকান রয়েছে, ১০০ থেকে ১২০টি।

 

রাজবাড়ী রেল মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুস মন্ডল বলেন, দেশে পুরোনো শীতবস্ত্রের চাহিদা অনেক বেশি। দাম কম হওয়ায় এই মার্কেট নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের প্রধান ভরসা। বিক্রেতারা বলছেন প্রতিবছরেই যখন শীতের প্রকোপ বাড়ে তখন বেচাকেনা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

উল্লেখ্য, রাজবাড়ী শহরের রেললাইনের ভিতরে বসেছে ৪০টি পুরাতন শীত বস্ত্রের দোকান। প্রতিটি দোকানে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার বিক্রি হয়। সে হিসেবে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই ৪ মাসে ২ কোটি টাকার বেশি বাণিজ্য হবে রাজবাড়ী রেললাইন মার্কেটে।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর