১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সবচেয়ে গৌরবের দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাঙ্গালী জাতি চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে এবং নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ৫৪তম বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপ্রতি, প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্যবৃন্দ, দেশ বিদেশের গূরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ পুরো জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে স্মরণ করবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।
আর এ লক্ষ্যে প্রস্তত করা হয়েছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধ চত্বরে ধোয়া-মোছার কাজ সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে বাহারি রঙয়ের ফুলের চারা রোপণ করা হয়েছে। পুরোনো ফুলগাছগুলোর ডালপালা ছাটাইসহ বিভিন্ন সিঁড়িতে ও বিভিন্ন গূরুত্বপূর্ণ স্থানে পরছে রঙ তুলির আঁচর।
বিজ্ঞাপন
![]()
জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে, সৌধ চত্বরের চারপাশে কয়েকশো টবে শোভা পাচ্ছে নানা ধরনের ফুল আর পাতা বাহারের গাছ। নিরাপত্তার জন্য ওয়াচ টাওয়ার, উচ্চ মাত্রার সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ডগ স্কোয়াড দিয়ে প্রতিটি স্থান তল্লাশি করছে।
১৬ ডিসেম্বর ৫৪তম মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস আর এরপরেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে লাখো মানুষের ঢল নামবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে।
![]()
বিজ্ঞাপন
এদিকে, বিজয় দিবসের আগেই জাতীয় স্মৃতিসৌধের সব ধরনের কাজ শেষ করেছে গণপূর্ত বিভাগ। স্মৃতিসৌধের ফটক থেকে মিনার পর্যন্ত পুরো এলাকা ধুয়েমুছে চকচকে করা হয়েছে। সৌধ চূড়া পরিষ্কার করার কাজ শেষ। লেকও পরিষ্কার করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে লাল-সবুজ আলো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা।
![]()
এ ব্যাপারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার খান আনু বলেন, মহান বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দসহ লাখো মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এজন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধকে একমাস ধরে আমাদের প্রায় দেড়শো কর্মী ও দুটো প্রেশার মেশিন দিয়ে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার ও রঙ তুলির আঁচড় এবং নানা রঙের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ ডিসেম্বর স্মৃতিসৌধে আগত সকল দর্শনার্থীর সর্বোচ্চ নিরাপত্তাসহ ও যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এখানকার পুলিশ ও আনসার ক্যাম্পকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক অবস্থানে রাখা হয়েছে। আমাদের আশা ১৬ ডিসেম্বর সকলেই একটি সুন্দর এবং উপভোগ্য বিজয় দিবস উদযাপন করতে পারবেন।
নিরাপত্তার বিষয়ে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, মহান বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা মন্ডলের সদস্য, রাষ্ট্রের গূরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন কুটনৈতিক মিশনের প্রধানগণসহ সকলে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান মহান মুক্তিযুদ্ধ আত্মোৎসর্গকারী শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সকলের নিরাপত্তার লক্ষ্যে ৪ হাজার পুলিশ সদস্যের সমন্নয়ে কঠোরভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রতিনিধি/টিবি

