শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

কোচিং না পড়িয়েই ফি আদায়, গাইড না কিনলে ফেল করানোর হুমকি

জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা 
প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম

শেয়ার করুন:

কোচিং না পড়িয়েই ফি আদায়, গাইড না কিনলে ফেল করানোর হুমকি

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে সমাজ উচ্চ বিদ্যালয়ে কোচিং না করিয়েও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক কোচিং ফি আদায় এবং নির্দেশিত কোম্পানির গাইড বই না কিনলে ফেল করানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাদিস উদ্দিন তালুকদারের বিরুদ্ধে।

এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গত ৩ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করে।


বিজ্ঞাপন


অভিযোগ দেওয়ায় ক্ষোভে গত মঙ্গলবার বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের অফিসে ডেকে নিয়ে হুমকি দেন প্রধান শিক্ষক। একই সাথে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন।

এই ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা আরও একটি লিখিত অভিযোগ ইউএনওর কাছে জমা দেয়।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সমাজ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় ৫০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থী ৬৫ জন এবং শিক্ষক রয়েছেন ১২ জন।

অভিযোগ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো রকম কোচিং না করিয়েই এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছে ৯০০ টাকা করে কোচিং ফি দাবি করেন প্রধান শিক্ষক। এই টাকা দেওয়া বাধ্যতামূলক বলেও জানানো হয়। এছাড়া গত জুলাই মাসে 'লেকচার' কোম্পানির গাইডের নির্দিষ্ট পৃষ্ঠা উল্লেখ করে সিলেবাস দিয়ে বলা হয়—গাইড কেনা বাধ্যতামূলক, অন্যথায় প্রি-টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করানো হবে।


বিজ্ঞাপন


এইসব ঘটনায় গত ৩ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীরা ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ৯ ডিসেম্বর পরীক্ষা চলাকালীন প্রধান শিক্ষক অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের ডেকে নিজের অফিস কক্ষে নিয়ে যান। তাঁর কক্ষে বসিয়ে শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও ভিডিও ধারণ করা হয়, যা নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, মামলার আসামিকে যেমন রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তাদেরও একইভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনিয়মের বিরুদ্ধে তারা অভিযোগ করেছে এবং তারা যথাযথ বিচার চায়।

তবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাদিস উদ্দিন তালুকদার অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদের কারণে পরীক্ষার যেটুকু সময় নষ্ট হয়েছে, পরে সেটুকু সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থী ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ ও ভিডিও করার বৈধতা সম্পর্কে তিনি কোনো পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক আমেনা খাতুন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর