দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মানবিক এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে জন্ম নিল নতুন আলো। ‘দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘আমি একজন হতোভাগি। পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাচ্চা রেখে গেলাম। দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন’—এমন একটি চিরকুট লিখে নবজাতককে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রেখে যান এক নারী। চিরকুটের পাশে কিছু ওষুধও রাখা ছিল।
এক মাসের চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে, শিশুটিকে নওগাঁ জেলার এনায়েতপুর (শান্তাহার) এলাকার এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুটির অভিভাবকত্ব নেন ওই দম্পতি।
গত ৬ নভেম্বর ‘নানা-নানি’ পরিচয়ে এক দম্পতি নবজাতকটিকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করান। শিশুর মায়ের খোঁজ করলে তারা বলেন, মা নিচে আছেন। মাকে আনার অনুরোধ করলে শিশুসহ তারা চলে যান।
শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম জানান, গত ৬ নভেম্বর একজন নারী নবজাতকটিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। পরে শিশুটির মাকে ডেকে আনার কথা বলে তিনি পালিয়ে যান। পরে আমরা শিশুর সঙ্গে একটি চিরকুট পাই। তাতে লেখা ছিল—‘শিশুটি মুসলিম। বিশেষ কারণে ফেলে গেলাম। কাউকে লালন-পালন করতে দেবেন মানুষ করার জন্য’।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অরবিন্দ শিশু হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে শিশুটি সুস্থ হয়ে ওঠে। এরপর ১১ নভেম্বর উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় শিশুটির অভিভাবকত্ব গ্রহণের ঘোষণা দিলে মোট ১৫টি আবেদন পড়ে। যাচাই-বাছাই শেষে নওগাঁর এক নিঃসন্তান দম্পতিকে শিশুটির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, শিশুটির লালন-পালন ও চিকিৎসায় অরবিন্দ শিশু হাসপাতাল যে অবদান রেখেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা চাই শিশুটি বড় হয়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে দেশ ও জাতির সেবা করবে।
তিনি আরও জানান, উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই শিশুটিকে নতুন অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রতিনিধি/এসএস

