জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র সম্প্রতি গাইবান্ধা জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে জাসদ কেন্দ্রীয় নেতা এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদিকে আহ্বায়ক করায় সদস্য সচিব মাওলানা শাহ মাহমুদ তার পদ থেকে পদত্যাগের আবেদন করেছেন।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক-সদস্য সচিবের বরাবরে পদত্যাগের আবেদন করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
এর আগে মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দলটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও মূখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম স্বাক্ষরিত গাইবান্ধা জেলা আহ্বায়ক কমিটি (সংশোধিত) অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে জাসদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদিকে আহ্বায়ক ও মাওলানা শাহ মাহমুদকে সদস্য সচিব করে ৬১ সদস্য বিশিষ্ঠ গাইবান্ধা জেলা আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন হয়।
এদিকে, ওই কমিটিতে আওয়ামী পন্থি ১৪ দলের সরিক জাসদের সক্রিয় নেতা এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদিকে আহ্বায়ক করায় স্থানীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে এনসিপির জেলা কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া দেন তারা।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এনসিপি জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা শাহ মাহমুদ তার পদ থেকে পদত্যাগের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিতে আবেদন করেছেন।
তিনি ওই পদত্যাগ পত্রে উল্লেখ করেছেন, আমি কিছুদিন পূর্বে গাইবান্ধা জেলার জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। দলের প্রতি আন্তরিকতা ও আদর্শিক অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ নিষ্ঠা নিয়ে কাজ চলমান রেখেছি। আমি দায়িত্ব নেবার পরেই দলের পরিচিতি সভা করেছি। জুলাই আগস্ট এ আহত ভাই-বোনদের খোঁজ খবর নিচ্ছি, যাচ্ছি শহীদ পরিবারের পাশে, ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার পাশাপাশি আমি সাংগঠনিক কাজ এগিয়ে নিচ্ছিলাম। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দলের অভ্যন্তরীণ পরিবেশে যে পরিবর্তন লক্ষ্য করছি, তা আমার ব্যক্তিগত নীতি, গণতান্ত্রিক বিশ্বাস ও সাংগঠনিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৭ দিনের ভিতরে বিনা নোটিশ এ পুণরায় কমিটি দিয়ে সংশোধিত আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য সচিব মনোনিত করছেন। কিন্তু যাকে আহ্বায়ক মনোনিত করা হয়েছে তিনি আওয়ামী পন্থি ১৪ দলের সরিক জাসদের সক্রিয় নেতা, হাসানুল হক ইনুর খাস অনুসারী। গত মাসেও তিনি তার সাংগঠনিক কাজ করেছেন। হঠাৎ কিভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টিতে পূর্ণবাসিত হলো, আমরা বুঝতে পারছি না। ফ্যাসিবাদের দোসরকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি গাইবান্ধা জেলায় নেতৃত্ব দেওয়া আমার পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়। জুলাই-আগস্ট পরিপন্থী কাজ আমি করতে পারবো না। কারণ জুলায়ে আমার জেলায় ৬ ভাই শহীদ হয়েছেন এবং ৩০০ এর কাছাকাছি আহত হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
গাইবান্ধা জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা শাহ মাহমুদ বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি জাতীয় নাগরিক পার্টিতে পুর্ণবাসিত হওয়াকে জুলাই শহীদ, আহতদের সঙ্গে গাদ্দারি করার সমান। সমান আমার সেই জুলাই আগস্টের উপস্থিত ছাত্র-জনতার সঙ্গে। এসব কারণে দায়িত্ব পালন করা আমার জন্য কঠিন হয়ে উঠেছে। তাই গভীর বিবেচনা ও সমালোচনার পর আমি এনসিপির সদস্য সচিব পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
প্রতিনিধি/টিবি

