রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে ওই রোগী মারা যান। এ সময় সেখানে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রোগীর স্বজনরা।
বিজ্ঞাপন
নিহত রোগীর নাম মোছা. এলেমা। তিনি নগরীর জিন্নাহনগর এলাকার মো. আলেমের স্ত্রী।
মো. আলেম বলেন, আমরা বিকেল ৪টার পর হাসপাতালে আসি। আমি একা মানুষ, জাস্ট শুধু আমি হেল্প চেয়েছি, আমাকে হেল্পটাও করছে না তারা। অক্সিজেন না পাওয়ার কারণে সে মারা গেল। নিঃশ্বাস নিতে পারছিল না। আমি বলছিলাম, আমার রোগীর যা হবে হবে, অক্সিজেনটা দেন ভাই। কিন্তু আমার দিকে তাদের কোনো লক্ষ্যই নাই, অন্যদিক নিয়ে ব্যস্ত ছিল। কেউ আসেনি।
রোগীর ভাতিজা খায়রুল হাসান রুবেল বলেন, কাকি নিজে অক্সিজেন চাচ্ছিল। বলছিল, আমাকে অক্সিজেন দিতে বলো, তাহলে আমি ভাল হবো। দাঁতি লেগেছিল, দাঁতি যখন ছুটাই, তখন আবার অক্সিজেন চাচ্ছে। এর আগেও এরকম প্রবলেম হয়েছে, অক্সিজেন দিলে ঠিক হয়।
রুবেল বলেন, ওরা বলছিল স্যারের ওখানে এই লিয়ে আসেন। ওখানে ২০ টাকা দেন, ওখানে ৩০ টাকা দেন, ওখানে ৫০ টাকা দেন। এসব লাগাইছে ওরা। আমরা বলেছি, দুটাকার কাছে ৫ হাজার লেন, হাত ধরছি পা ধরছি শুধু অক্সিজেনটা দেন। তারা অক্সিজেন না দিয়ে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয় অক্সিজেন ছাড়া। ওয়ার্ড পর্যন্ত যাওয়া অবস্থায় রোগী ধড়ফড় করে মারা গেছে।
বিজ্ঞাপন
রুবেল অভিযোগ করে বলেন, হান্ড্রেড পারসেন্ট ডাক্তারের অবহেলার কারণে মারা গেছে। আমি কথা বলতে যাই, আনসাররা বলে আমরা যা করি ভালর জন্য করি। আমাদেরকে পুলিশ বাহিনী ডাকতে বাধ্য করেন না। আমরা যদি ফোন দি, তাহলে আপনারা টিকতে পারবেন না। বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দেয় আমাদেরকে।
তবে দায়িত্ব পালনে অবহেলা হয়নি বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, সাড়ে ৫টা নাগাদ জরুরি বিভাগে একটা নারী রোগী আসেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয় এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক ভর্তি নিশ্চিত করেন। ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ভর্তি নেওয়ার পর অক্সিজেন নেওয়ার পর জরুরি বিভাগ ত্যাগ করেন। ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে থাকা অবস্থায় অবনতি হলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ডা. শংকর রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে যে ঘটনাটা হয়েছে, তা ন্যাক্কারজনক ও নিন্দনীয়। রোগীর স্বজনরা জরুরি বিভাগের অন ডিউটি দুজন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও একজন এমএলএসএসকে অতর্কিতভাবে পেছন থেকে আঘাত করে। তারা হাসপাতালে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরিচালক তখন অবহিত হন এবং পুলিশকে জানানো হয়। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রতিনিধি/টিবি

