বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

মৌলভীবাজারে হঠাৎ জ্বর, সর্দির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪ জুলাই ২০২২, ০৪:৪২ পিএম

শেয়ার করুন:

মৌলভীবাজারে হঠাৎ জ্বর, সর্দির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে

দেশব্যাপী করোনা পরিস্থিতি দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অনেকের রয়েছে অনীহা।

করোনার আতঙ্ক দেশজুড়ে থাকলেও সীমান্তবর্তী জেলা মৌলভীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় আশঙ্কাজনক হারে জ্বর, সর্দিকাশির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, অসহনীয় শরীর ব্যাথা, ঘন ঘন বমি, রয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। ফলে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অনেকেই ভর্তি হচ্ছেন।


বিজ্ঞাপন


মৌলভীবাজারে গত কয়েকদিন থেকে চলছে থেমে থেমে বৃষ্টি, আছে নিন্মাঞ্চল গুলোতে জলাবদ্ধতা। সেই সাথে ঘরে ঘরে বাড়ছে জ্বরের প্রাদুর্ভাব। চারদিকে জ্বরের প্রকোপ বাড়লেও অনেকেই মনে করছেন অব্যাহত বৃষ্টির ফলে সামান্য ঠাণ্ডা লাগা কিংবা বৃষ্টিতে ভেজার কারণেই হচ্ছে জ্বর। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলের সতর্ক থাকা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার (৪ জুলাই) জেলা সিভিল সার্জন অফিসের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত পাঁচদিনে জেলায় ৪৮ জনের স্যাম্পল সংগ্রহ করে ৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

সদর হাসপাতালের করোনা স্যাম্পল সংগ্রহকারি ল্যাব টেকনিশিয়ান রফিকুল ইসলাম জানান, গত পাঁচদিন ধরে করোনা টেষ্ট করতে আসা মানুষজনের চাপ বেড়েছে। এখন দিনে ২০ থেকে ২৫ জন নানান উপসর্গ নিয়ে করোনা টেষ্ট করতে আসছেন। 

এদিকে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না অনেকেই। কেউ কেউ মাস্ক থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখলেও আবার অনেকে মাস্ক পরিধান বেমালুম ভুলে গেছেন। তাদের আচরণ দেখে মনে হয় করোনা নিয়ে কোনো সচেতনতা নেই তাদের মধ্যে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অনেকের মধ্য রয়েছে অনীহা।


বিজ্ঞাপন


এলাকার সচেতন মহল মনে করেন, মানুষের অসচেতনতার কারণে সারাদেশে আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। মানুষের অসাবধানতাবশত স্বাস্থ্যবিধি না নামা, নিয়মিত মাস্ক পরিধান না করার কারণে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে বলে জানা গেছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক বাসাবাড়িতে জ্বর, সর্দিকাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। আশঙ্কাজনক হারে জ্বরের রোগী বেড়ে যাওয়ায় জনসাধারণের মাঝে রয়েছে করোনাভীতির ভয়।

তবে এই জ্বর-সর্দি-কাশি থেকে নিরাময় পেতে অধিকাংশ রোগী জেলার শহরাঞ্চল কিংবা গ্রামের বিভিন্ন হাটবাজারের ফার্মেসী থেকে ওষুধ এনে খাচ্ছেন। এ কারণে জেলায় করোনা সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাচ্ছেনা, এমন ধারণা সচেতন মহলের।

গত এক চারদিন ধরে সর্দি-জ্বরে স্ত্রীসহ দুই সন্তান সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত। স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে জ্বরের ওষুধ কিনে খাচ্ছেন বলে জানান দিনমজুর আবিদ মিয়া।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আজমল আলী বলেন, ‘ওষুধ খেলে জ্বর কমে কিন্তু আবার বেড়ে যায়। এবারের জ্বরে সারা শরীরের ব্যাথা অনুভব করছি।’

এদিকে জেলা সদরের অধিকাংশ ফার্মেসিতে আগতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগই এসেছেন জ্বর, সর্দিকাশির ওষুধ নিতে। কয়েকটি ফার্মেসির কর্মচারীরা স্বীকার করেছেন সর্দি-জ্বরের ওষুধ একটু বেশি বিক্রি হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রেজাউল করিম মীর বলেন, ‘অনেকেই নিজের ইচ্ছে মতো প্যারাসিটামল বা অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাচ্ছেন। এটা মোটেও ঠিক না। সিজনাল সর্দি-জ্বর নাকি কারোনার জন্য সর্দি-জ্বর তার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।’

তিনি আরও জানান, ইদানীং জ্বর সর্দি নিয়ে অনেক রোগি আসছেন। আমরা বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষাসহ অল্প পরিমাণ ওষুধ দিচ্ছি এবং তরল খাবারের পরামর্শ দিচ্ছি।

প্রতিনিধি/ একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর