সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বিএনপি সন্ত্রাস-দখলদারিত্বে বিশ্বাস করে না: অ্যাড. মিলন

জেলা প্রতিনিধি, রাজশাহী
প্রকাশিত: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম

শেয়ার করুন:

বিএনপি সন্ত্রাস-দখলদারিত্বে বিশ্বাস করে না: অ্যাড. মিলন

বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বলেছেন, বিএনপি জনগণের দল। এই দলের জন্ম হয়েছে জনগণের সেবা করা। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বিএনপি জনগণের পাশে থেকে সেবা করে যাচ্ছে। যতদিন পৃথিবী ততদিন পর্যন্ত পরম্বপরায় জনগণের সেবা করে। এজন্য বিএনপি কখনও সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বে বিশ্বাস করে না। 

বুধবার (৫ আগস্ট) বিকেলে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণ সচেতনতামূলক প্রচারণায় আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পবা উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের ভালাম ৮নং ওয়ার্ড বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনি প্রস্তুতি গ্রহণের লক্ষ্যে কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 


বিজ্ঞাপন


অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন বলেন, এ সংকট মুহূর্তে জনগণকে রক্ষা করতে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগসহ দেশের সব মানুষকে নিরাপত্তা দিতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার সুযোগ্য সন্তান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যিনি এখান থেকে দশ হাজার কিলোমিটার দূরে ওই ট্রেন্স নদীর পাড় থেকে দেশ দেশের মানুষকে পাহারা দিতে নির্দেশ দেন। তার নির্দেশনায় ছাত্র, যুবক, ও বিএনপির সকল স্তরের নেতাকর্মীরা রাতের পর পর সংখ্যালঘু থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের বাড়ি ঘরও পাহারা দেন। তিনি সেখানে চিকিৎসার জন্য গিয়ে এখনও দেশে ফিরে আসতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, পতিত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রায়ই বলতেন আওয়ামী লীগের পতন হলে দেশে পাঁচ লক্ষ নেতাকর্মীকে বিএনপি মেরে ফেলবে। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে বিএনপি একটি লোককে হত্যা করেনি। কিছু বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটলেও মানুষ মারা যায়নি বলে জানান তিনি। অথচ আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিজ বাড়িতে ঘুমাতে পারতো না। এমনকি আত্মীয় স্বজনরাও পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়িতে জায়গা দিতেন না। নেতাকর্মীরা রাতের পর রাত মাঠে বিভিন্ন ফসলের মধ্যে ঘুমাতেন। এছাড়াও তারা পানির পাম্পে এবং টং ঘরেও ঘুমাতেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ এতটাই হিংস্র হয়ে উঠেছিলো তারা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী নেতাদের নামে অযথা মামলা দিতো। কোথাও কোন ঘটনা ঘটলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা ও গায়েবী মামলা দিতো। বিগত হাসিনা সরকারের আমলে তিনি ৪৯ মাস জেল খেটেছেন। এই মাঠে অনেকেই তার জেল পার্টনার ছিলেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মিলন বলেন, শুধু নেতাকর্মীদের নয় তিনবারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও ঐ ফ্যাসিস্ট হাসিনা মিথ্যা মামলায় রায় দিয়ে জেলে রেখেছিল। সেখান থেকে তিনি অসুস্থ হন। আজও তিনি অসুস্থ হয়ে আছেন। এর মধ্যে তিনি ছয়বার গুরুতর অবস্থায় চলে গিয়েছিলেন বলে জানান মিলন।


বিজ্ঞাপন


বিএনপির নেতা বলেন, এই আপোদকালীন সরকারের প্রধান আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই নির্বাচন পেছানোর জন্য জামায়াতে ইসলাম নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। তারা এক সময় সংস্কার নিয়ে, পরে পিআর নিয়ে মাতোয়ারা হলেও এখন আবার গণভোট নিয়ে দেশে অরাজকতা করার চেষ্টা করছে। তারা বলছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই গণভোট দিতে হবে। কিন্তু বিএনপি বলেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একসঙ্গে গণভোটও হবে। এর কোনো বিকল্প নাই বলে জানান তিনি। আর এটা নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি করলে দেশের জনগণ কাউকে ছাড় দেবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ১৮ থেকে ৩৫ বছরের যুবকেরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ কোনো নির্বাচনেই ভোট দিতে পারেনি। এর কারণ হচ্ছে দেশে ভোটার ছিলেন মাত্র একজন। তিনি হলেন শেখ হাসিনা। তার নির্দেশেই দিনের ভোট, রাতে কিংবা নির্বাচনের আগের দিনেই ব্যালট বাক্স ভরে ফেলতো হাসিনার কতিপয় ভোটার। এছাড়াও তিনি আমি-ডামি নির্বাচন করে এমপি বানিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। কিন্তু দেশে এমন পরিস্থিতি আর আর আসবেনা। বিএনপি নিষিদ্ধ ঘোষিত বাদে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে চায়। এজন্য নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র আর না করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আহবান জানান।

শফিকুল হক মিলন বলেন, পিআর পদ্ধতি কোনো দেশে সুফল বয়ে আনে না। এতে গণতন্ত্র ও সু-শাসন প্রতিষ্ঠা হয়না।  এর উজ্জল দৃষ্টান্ত হলো শ্রীলঙ্কা ও নেপাল। সেখানে সকাল বিকেল প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হতো। সেখানকার এমপি মন্ত্রীরা হাফপ্যান্ট পরে পালিয়েছে। সেখানকার জনগণ তাদের পুকুরে ডুবিয়েছে বলে জানান তিনি। এমন অবস্থা কোনো দেশে ঘটতে থাকলে সে দেশে কোনো উন্নয়ন হয় না। আর উন্নয়ন না হলে কী হয় তা সবাই জানে বলে জানান মিলন। সেজন্য জামায়াতের কথায় এবং ষড়যন্ত্রে পা না দিয়ে আসছে নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানান মিলন।  

পবার ভালাম ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সভায় বড়গাছী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জাকের আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পবা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম আহ্বায়ক  সুলতান আহমেদ, বড়গাছী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন, পারিলা ইউনিয়ন বিএনপি’র আহ্বায়ক রেজাউল করিম, যুগ্ম আহ্বায়ক মোজাম্মেল ও আশরাফ আলী, সদস্য রায়হান উদ্দৌলাহ, মকবুল হোসেন, আব্দুর রহমান, জালাল উদ্দীন সরকার, মিনারুিল , আকতার আলী, সোহাগ রানা শুভ, রাজু, লিটন, কৃষকদলের সদস্য সচিব আলমগীর, কৃষকদের নেতা নকীর মাস্টার, ইব্রাহিম, রবিউল, শফিকুল, শফিকুল বাবু, হান্নান, মামুন, মোনারুলসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ।

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর