নরসিংদীর রায়পুরায় বাহেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহমিনা সরকার নামের এক প্রধান শিক্ষক প্রায় দেড় বছর বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত।
বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও তিনি নিয়মিত বেতন-ভাতা গ্রহণ করে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ দাফতরিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বিষয়টি জানার পর সোমবার (৩ নভেম্বর) বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে স্কুলে পাওয়া যায়নি। তবে সেখানে কথা হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সঙ্গে।
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে ১২ জন শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩১২ জন। তাহমিনা সরকার ২০১৬ সালের মার্চ মাসে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০২৩ সালে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে কয়েক দফায় অগ্নিসংযোগ ও টিউবওয়েলে বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটে। ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে অফিসকক্ষের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও মালপত্র পুড়ে যায়। পরে প্রধান শিক্ষকের করা মামলায় অফিস সহকারী কাম নৈশপ্রহরী মামুনসহ স্থানীয় তিনজন জেলও খাটেন। এরপর থেকেই তিনি নানা অজুহাতে বিদ্যালয়ে আসছেন না। তবে উপজেলা অফিসে যান প্রায়ই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বলেন, আগুন লাগানো ও টিউবওয়েলে বিষ দেওয়ার ঘটনার পর থেকেই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আর আসছেন না। প্রধান শিক্ষক না থাকায় নানা সংকট দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিক কার্যক্রম ও শিক্ষার্থীদের পাঠদান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে হতাশ। তারা বলে, প্রধান শিক্ষক প্রায় এক বছর বিদ্যালয়ে আসেন না। এতে আমাদের পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে। আমরা চাই তিনি দ্রুত স্কুলে ফিরে আসুন।
বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি খন্দকার শাহাদাত হোসেন বলেন, যদি তিনি স্কুলে আসতে না চান, তবে তার পরিবর্তে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। আমরা চাই স্কুল ভালো চলুক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক তাহমিনা বলেন, কেন স্কুলে যাচ্ছি না সেটা আপনাকে কেন বলব। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিষয় তারা জানে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সোহরাফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, প্রধান শিক্ষক তাহমিনা সরকারের ভাষ্যমতে, তিনি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। আগের ডিপিও স্যারের কাছ থেকে শুরুতে তিন মাসের ছুটি নিয়েছিলেন, পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমতিতে অফিসে আসতেন; কিন্তু স্কুলে যেতেন না। তিনি বলেন, আমি সম্প্রতি তাকে নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে নির্দেশ দিয়েছি। তিনি যদি না যান, নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এসএস
