শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

দিনাজপুরে অসময়ের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ধান-আলু-সবজির খেত

সুমন চন্দ্র, দিনাজপুর
প্রকাশিত: ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৭ পিএম

শেয়ার করুন:

Dhaka mail
দিনাজপুরে অসময়ের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ধান-আলু-সবজির খেত। ছবি: ঢাকা মেইল

দিনাজপুরে অসময়ের টানা বৃষ্টিতে কৃষকরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কয়েক দিনের টানা বর্ষণে জেলার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে রোপা আমন ধান, আগাম আলু ও বিভিন্ন মৌসুমি সবজির খেতে পানি জমে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক জমিতে ধানগাছ লুটিয়ে পড়েছে, আর বীজতলা ও সবজি খেতে পানি জমে বীজ পচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা ইতোমধ্যে ধান কাটা ও ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে পাকা ধান এখন বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। নিচু জমির অধিকাংশ রোপা আমন খেতে পানি জমে ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক মাঠে ধানগাছ একেবারে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। খেতের জমে থাকা পানি নেমে না গেলে গাছ পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


বিজ্ঞাপন


শুধু ধান নয়, আগাম আলু ও সবজি খেতেও দেখা দিয়েছে একই চিত্র।

বোচাগঞ্জ উপজেলার কৃষক সবুজ রায় বলেন, “কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে আমার পাঁচ বিঘা জমির ধান একেবারে লুটিয়ে পড়েছে। বৃষ্টি যদি আরও কয়েক দিন চলে, তাহলে পুরো ফসল শেষ হয়ে যাবে।”

একই এলাকার কৃষক দিনেশ রায় বলেন, “বৃষ্টিতে ফসল ডুবে গেছে। কয়েক দিনের মধ্যে পানি না নামলে ধানগাছ পচে যাবে, পুরো বছরের পরিশ্রম শেষ। আমরা এখন দিশেহারা হয়ে গেছি। সার, বীজ, শ্রম—সবকিছুতে খরচ করেছি ধার করে। যদি ফসল বাঁচাতে না পারি, তাহলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।”

আগাম আলু চাষি আব্দুল মালেক বলেন, “আমি দুই বিঘা জমিতে আগাম আলু রোপণ করেছিলাম। ভাবছিলাম এবার আগাম বাজারে ভালো দাম পাব। কিন্তু হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে পুরো জমি পানিতে ডুবে গেছে। এখন আলুর চারা পচে যাচ্ছে। পানি না নামলে সব শেষ। সার, বীজ, কীটনাশকে যা খরচ করেছি, সব ডুবে গেল।”


বিজ্ঞাপন


কৃষকরা জানান, এই সময় সাধারণত ধান কাটার প্রস্তুতি চলে। কিন্তু হঠাৎ করে হওয়া টানা বৃষ্টিতে শুধু ফসল নয়, কৃষকদের মনেও নেমে এসেছে হতাশা।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আফজাল হোসেন বলেন, এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বৃষ্টিপাতের ফলে প্রাথমিকভাবে আক্রান্ত হয়েছে ৫৮১ হেক্টর ধান, ২২ দশমিক ৫ হেক্টর আগাম আলু এবং ২৩ দশমিক ৫ হেক্টর আগাম সবজি।

তিনি আরও জানান, ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। নির্ণয় সম্পন্ন হলে মোট ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর