উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নওগাঁয় গত ২৪ ঘণ্টায় প্রধান আত্রাই নদীর জোতবাজার পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে বন্যাপ্রবণ এলাকার প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বন্যার আতঙ্কিত দেখা দিয়েছে।
এ ছাড়া নদী তীরবর্তী নিম্নঅঞ্চল মানুষের মধ্যে বন্যার আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই নদীগুলোতে যে পরিমাণ পানি বাড়ছে, তাতে জেলার কিছু নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের।
বিজ্ঞাপন
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায় , নওগাঁর আত্রাই নদীর জোতবাজার পয়েন্টে ৪৭ সেন্টিমিটার বিপৎসীমা উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। আত্রাই নদীর রেলস্টেশন পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার, মহাদেবপুর পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার, শিমুলতলী পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির এই হ্রাস-বৃদ্ধিতে নদীর অরক্ষিত তীরে ভাঙনের আশঙ্কাও রয়েছে।
মান্দা উপজেলার জোতবাজার গ্রামের কৃষক নিবারন চন্দ্র বলেন, এখন বোরো ধান চাষাবাদের মৌসুম চলছে । নদীর তীর ঘেঁষে আমাদের ফসলের মাঠ। পানি বাড়লে আমাদের জমিগুলো সব বুফে যাবে। গত দুই দিন থেকে আত্রাই নদীর পানি বাড়ছে। এই জন্য আমরা আতঙ্কে আছি। কখন কি হয়। যদি আরও পানি বাড়ে তাহলে জমি ও ঘর ডুবে যাবে।
মহাদেবপুর উপজেলার শিমুল তলী গ্রামের কৃষক জাফের উদ্দিন বলেন, গত সপ্তাহেও নদীর পানি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু শুক্রবার থেকে পানি আবাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতবছর তো পানি বাড়ার কারনে জমির ধানের ক্ষতি হয়েছিল। এবার যদি আবার পানি বৃদ্ধি পায় তবে ফসলের মাঠ তলিয়ে যেতে পারে। আমরা তো ক্ষেত্রে ফসল উৎপাদন করেই সংসার চালাই। বন্যা হলে বড় বিপদ হয়ে যাবে আমাদের।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফউজ্জামান খান, বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে কয়েক দিন ধরেই আত্রাই নদীর পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আত্রাই নদীর জোতবাজার পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। এ ছাড়া আত্রাই নদীর রেলওয়ে স্টেশন পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার, শিমুলতলী পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার, মহাদেবপুর পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন যদি বৃষ্টির পানি বাড়ে তাহলে সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে বেশি সময় লাগবে না।
বিজ্ঞাপন
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, জেলার আত্রাই নদীর তিনটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলো পরিদর্শন করছি। চেষ্টা করছি দ্রæত কিভাবে মেরামত করা যায়। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী দুই-তিন দিন পানি আরও কিছুটা কমতে পারে।
নওগাঁ জেলা প্রশাসন অফিসের তথ্যমতে, নওগাঁর সদর, মান্দা, আত্রাই, রানীনগর, পোরশা ও সাপাহার, ধামইরহাট উপজেলার ৫০ টি গ্রামের প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ নদীর তীরে বসবাস করছে। ইতোমধ্যে নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলো মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এজে