আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির অফিসে হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় ভাঙচুর করা হয় অফিসে থাকা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি। খোদ বিএনপি নেতাকর্মীরাই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে দলটির আরেক পক্ষের নেতারা অভিযোগ করেছেন।
সোমবার (২০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পালশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অফিসটি বিএনপির এক নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হতো।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক জোবায়েদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিএনপির একাংশের কয়েকজন নেতা অভিযোগ করেছেন, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসন থেকে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার রেজাউল করিমের অনুসারীরা সোমবার রাতে হামলা চালিয়েছেন। হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন তার পক্ষের অনুসারী স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান। সোমবার বিকেলে পালশা বিদ্যালয় মাঠে ব্যারিস্টার রেজাউল করিমের অনুসারীদের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
নওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রহিদুল ইসলাম বলেন, ব্যারিস্টার রেজাউল করিমের বাবা আজগর আলী বিগত সরকার আমলে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি বিএনপির সাবেক নেতা হলেও এখন আর দলে সক্রিয় নন। সোমবারের দোয়া মাহফিলের জন্য স্থানীয় নেতাদের সহযোগিতা চাইলেও অনেকে রাজি হননি। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে সভা শেষে অফিসে হামলা চালানো হয়।
বিজ্ঞাপন
_20251022_102453387.jpg)
তিনি আরও বলেন, আব্দুল মান্নান নামে স্থানীয় এক নেতা ভাঙচুরের নেতৃত্ব দেন। হামলাকারীরা অফিসের চেয়ার-টেবিল ও নেতাদের ছবি ভাঙচুর করেছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক ছাত্রদল নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা প্রোগ্রাম শেষ করে ডেকোরেটরের সামগ্রী ওই অফিসে রেখে চলে এসেছি। এরপর যারা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে, তারাই নিজেদের মধ্যে বিরোধ মেটাতে অফিসে হামলা চালায়। এখন আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
আব্দুল মান্নান দাবি করেন, নবগঠিত ইউনিয়ন বিএনপির বিতর্কিত কমিটির লোকজন ঘটনাটি ঘটিয়েছে। অনেক প্রত্যক্ষদর্শী আছেন, যারা হামলার সময় উপস্থিত ছিলেন। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
এ বিষয়ে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার রেজাউল করিম ও তার বাবা আজগর আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক জোবায়েদ হোসেন বলেন, এমপি প্রার্থী রেজাউলের একটি প্রোগ্রাম ছিল। তারা প্রোগ্রাম শেষ করে যাওয়ার পরে দলীয় ওয়ার্ড শাখা কার্যালয়ে কয়েকজন হামলা চালিয়েছে বলে শুনেছি।
ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত— জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় কিছু বিএনপি ও আওয়ামী লীগের লোকজন হামলায় অংশ নিয়েছে, যতটুকু তথ্য পেয়েছি।
দুর্গাপুর থানার ওসি আতিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনা বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/টিবি

