রোববার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বান্দরবানে এইচএসসি ফলাফলে ধস

জেলা প্রতিনিধি, বান্দরবান
প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৫ পিএম

শেয়ার করুন:

বান্দরবানে এইচএসসি ফলাফলে ধস

চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় বান্দরবান জেলায় পাসের হার এবং জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে আশঙ্কাজনকভাবে। এবার জেলার সামগ্রিক পাসের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা গত বছরের ৫৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ থেকে ২২ দশমিক ০২ শতাংশ কম।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর বান্দরবানে কলেজ, মাদ্রাসা (আলিম) ও টেকনিক্যাল মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৪ হাজার ৭১ জন। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৩৩ জন কৃতকার্য হয়েছে, ৯৪ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে এবং ২ হাজার ৫৩৮ জন অকৃতকার্য হয়েছে। গত বছর জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৭৭ জন। অর্থাৎ, এবারে জিপিএ-৫ অর্জনকারীর সংখ্যাও প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। কলেজ পর্যায়ে পরীক্ষার্থী ছিল ৩ হাজার ৮৭১ জন। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৯৪ জন পাস করেছে, ৯৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে এবং অকৃতকার্য হয়েছে ২ হাজার ৪৭৭ জন। মাদ্রাসা (আলিম) পর্যায়ে ১২৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০৪ জন পাস করেছে এবং একজন জিপিএ-৫ পেয়েছে। টেকনিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরীক্ষার্থী ছিল ৭৭ জন; এর মধ্যে ৩৫ জন কৃতকার্য হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


এবারও জেলার সেরা ফলাফল করেছে লামা কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রতিষ্ঠানটির ৬২ জন পরীক্ষার্থী সবাই পাস করেছে, যার মধ্যে ৩১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ—এখানে ২১০ জনের মধ্যে ২০৬ জন পাস করেছে এবং ২৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

অন্যদিকে, জেলার বৃহত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বান্দরবান সরকারি কলেজে এবার ফলাফল সবচেয়ে হতাশাজনক। কলেজটির ১ হাজার ১৭৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৪০ জন পাস করেছে, ৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে এবং ৮৩৪ জন অকৃতকার্য হয়েছে। পাসের হার মাত্র ২৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

আরও পড়ুন: নওগাঁর ৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল

বিশ্লেষকরা বলছেন, পার্বত্য অঞ্চলে এক সময় আশার আলো জ্বালানো শিক্ষা ব্যবস্থা এখন নানা সমস্যায় নুইয়ে পড়েছে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের চরম সংকট, অভিভাবকরা সন্তানদের প্রতি নজরদারি কম রাখা, মানসম্মত শিক্ষকের শিক্ষার প্রতি অবহেলা অভাব ও শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝুঁকিতে থাকার কারণে পাশের হার কমে আসছে। ভবিষ্যতে অভিভাবকরা সন্তানদের প্রতি গুরুত্ব ও শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণ করা, শিক্ষকদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বাড়ানো না গেলে ভবিষ্যতে শিক্ষারমান আরাও ভয়াবহ হবে বলে মনে করছেন তারা।


বিজ্ঞাপন


জেলা শিক্ষা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ছালেহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, “প্রতিবছরই ফলাফল নিম্নমুখী হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করছে এবং অভিভাবকরা সন্তানের প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছেন না। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-অভিভাবক বৈঠক করে শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ চলছে।”

বান্দরবান সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নুরুল আবছার চৌধুরী বলেন, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল যেমন রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি থেকে অনেক শিক্ষার্থী আর্থিক সংকটে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। অন্যদিকে শিক্ষক সংকট ও ক্লাস পরীক্ষা অনিয়মিত আয়োজনের কারণে ফলাফল খারাপ হয়েছে।

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর