রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ইলিশ রক্ষায় ড্রোন সফল; তিন দিনে জব্দ ১৫ জাল, শিকারি শূন্য

জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী 
প্রকাশিত: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

ইলিশ রক্ষায় ড্রোন সফল; তিন দিনে জব্দ ১৫ জাল, শিকারি শূন্য
. ড্রোন নজরদারিতে তেঁতুলিয়া নদীতে শূন্য মা ইলিশ শিকারি। ছবি: ঢাকা মেইল

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় মা ইলিশ সংরক্ষণের চলমান অভিযানে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে। প্রথমবারের মতো ড্রোন ক্যামেরার আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরঙ্গ নদীতে পরিচালিত নজরদারিতে গত তিন দিনে কোনো অসাধু ইলিশ শিকারিকে নদীতে নামতে দেখা যায়নি। প্রশাসনের এই নতুন কৌশল অসাধু জেলেদের মনে বড় ধরনের ভয় সৃষ্টি করেছে।

উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকার ঘোষিত ২২ দিনের ইলিশ প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, নৌ-পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও থানা পুলিশের সম্মিলিত অভিযানের প্রধান হাতিয়ার এখন এই ড্রোন। ড্রোনের মাধ্যমে নদীর বাশবাড়িয়া, ঢনঢনিয়া, কেদিরহাট, হাজিরহাটসহ প্রায় আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সার্বক্ষণিক তদারকি চলছে।


বিজ্ঞাপন


তিন দিনে ১৫টি জাল জব্দ
নিষেধাজ্ঞার তৃতীয় দিন শেষে ড্রোন নজরদারির ফলস্বরূপ নদী থেকে ১৫টি বেহুন্দি জাল ও ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। ড্রোনের তীক্ষ্ণ চোখ এড়াতে না পেরে জেলেরা জাল ফেলেই পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে, যার ফলে নদীতে কোনো শিকারিকে সরাসরি আটক করার প্রয়োজন পড়েনি।

বাশবাড়িয়া লঞ্চঘাটের মাছ ব্যবসায়ী মিরাজ জানান, ‘নদীর আকাশে প্রতিদিন ড্রোন উড়তে দেখি। এতে সবাই সতর্ক হয়েছে। মা ইলিশ সংরক্ষণে আমরা প্রশাসনের পাশে আছি।’ স্থানীয় মৎস্যজীবী সান্টু ও সাইদুলও প্রশাসনের উদ্যোগকে প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেন এবং অবৈধভাবে মাছ ধরা জেলেদের প্রতিহত করার অঙ্গীকার করেন।

উপজেলা জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে প্রশাসনের এই নতুন উদ্যোগ অসাধু জেলেদের মনে ভয় সৃষ্টি করেছে। এটি মা ইলিশ সংরক্ষণে বড় ভূমিকা রাখবে।’

সার্বক্ষণিক নজরদারির গুরুত্ব
নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফরদাউস হোসেন বলেন, ‘প্রযুক্তির ব্যবহারে আমাদের অভিযান আরও কার্যকর হয়েছে। অসাধু জেলেদের মধ্যে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের নদীতে নামার সাহস হচ্ছে না।’


বিজ্ঞাপন


উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এম. এম. পরাভেজ নিশ্চিত করেন, ‘প্রশাসনের সহায়তায় ড্রোনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি চলছে। কোনো জেলে নদীতে অবৈধভাবে নামার চেষ্টা করলেই তাকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরতিজা হাসান বলেন, ‘মা ইলিশ দেশের মূল্যবান সম্পদ। সংরক্ষণের জন্য আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারসহ কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। রাতের বেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নদীতে টহল দেবে, আর দিনে ড্রোনের মাধ্যমে অবৈধ জেলেদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই সাফল্য প্রমাণ করে, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব।’

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর