বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম বলেছেন, জামায়াত আজ পিআরের নামে নির্বাচন না করার জন্য যে পাঁয়তারা করছে এবং বিএনপির সাথে যে দূরত্ব তৈরি করছে, তার ফলাফল জামায়াতের জন্য খুব ভালো হবে না।
শনিবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাজবাড়ী পৌরসভার কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে শহরে একটি বর্ণিল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌর কমিউনিটি সেন্টারে এসে শেষ হয়।
পরে পৌর কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয়তাবাদী ওলামাদল রাজবাড়ী জেলা শাখার আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ আইয়ুব খান আনসারীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব হাফেজ মাওলানা মোঃ লোকমান হোসেন এবং মাওলানা আনাজ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম বলেন, জামায়াত আজ পিআরের নামে নির্বাচন না করার জন্য যে পাঁয়তারা করছে এবং বিএনপির সাথে যে দূরত্ব তৈরি করছে, তার ফলাফল জামায়াতের জন্য খুব ভালো হবে না। জামায়াতে ইসলাম গোপনে গোপনে আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করছে। গত ৫ আগস্টের আগে যারা ছাত্রলীগ করতো তারা এখন বলে তারা শিবির করে। জামায়াত বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের লোকজনকে ভাগিয়ে নিচ্ছে। সুতরাং এই কাজগুলো করে জামায়াতে ইসলাম বিএনপির সাথে যে দূরত্ব তৈরি করেছে, এই জিনিসটা জামায়াতের কপালে ভালো কিছু দেবে বলে আমার মনে হয় না।
তিনি বলেন, রাজনীতি বড় কঠিন জিনিস, রাজনীতি খুব গভীরে যাওয়ার জিনিস। বাংলাদেশে যদি আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসে তাহলে এর জন্য জামায়াত দায়ী হবে। বাংলাদেশে আজ নির্বাচন হলে জামায়াতে ইসলাম প্রধান বিরোধী দল হতো। এর চেয়ে বেশি আশা করা এই মুহূর্তে জামায়াতের জন্য ঠিক নয়। জামায়াত যদি মনে করে নির্বাচনে জয়ী হয়ে তারা দ্রুত ক্ষমতায় চলে যাবে, তাহলে আমরা বলব দিল্লি বহু দূর।
বিজ্ঞাপন
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, জামায়াতের উচিত এই মুহূর্তে যতটুকু লাভ তাদের পকেটে নেওয়া সম্ভব তা ভাবা। সেটা হচ্ছে, নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে, জামায়াত বিরোধী দল হবে। এর চেয়ে বেশি যদি জামায়াত কিছু চায়, তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে সংকট তৈরি হবে, সেই সংকটের ফাঁকে যদি আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়, তার দায় জামায়াতকে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন অস্থির, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নেই। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে প্রশাসনও ঠিকমতো কাজ করছে না। এই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা ছিল আজকের রাজনীতিবিদদের সবচেয়ে বড় কাজ। কিন্তু তারা সেটা বাদ দিয়ে পিআর নামে এক জিনিস নিয়ে এসেছে। এই পিআর কি আপনারা, আমরা বুঝি, বুঝি না। এখন এই মুহূর্তে কাজ হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনা। দেশটি ভয়ংকর দুর্যোগের মধ্যে রয়েছে। ভারতীয় ষড়যন্ত্র চলছে। আবার আওয়ামী লীগও ষড়যন্ত্র করছে। এই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য যারা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবেন, আমি বলব তারা দেশের জন্য ক্ষতিকর কাজ করছেন। এজন্য আমি বলব জামায়াতে ইসলাম ভ্রান্ত রাজনীতি হাতে নিয়েছে, বিভ্রান্তির রাজনীতির দিকে এগুচ্ছে। আমার ধারণা এতে জামায়াতে ইসলামের নিজেরও অনেক ক্ষতি হবে।
অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী আহসান হাবীব, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেএ সবুর শাহীন, জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক এ মজিদ বিশ্বাস, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খায়রুল আনাম বকুল, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নেকবর হোসেন মনিসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী, জেলা ওলামাদলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিনিধি/একেবি
