শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

কুড়িগ্রামে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ফের ভোগান্তির মুখে চরবাসী

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২২, ১২:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

কুড়িগ্রামে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ফের ভোগান্তির মুখে চরবাসী

কুড়িগ্রামে সম্প্রতি বন্যায় জনমনে রেখে যাওয়া দগদগে ক্ষতকে উস্কে দিতে জেলার ধরলা দুধকুমার তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের বুকে আবারো ধেঁয়ে আসছে উজানের ঢল। এতে করে আবারও প্লাবিত হচ্ছে নদীর তীরবর্তী নতুন গ্রাম। ডুবে যাচ্ছে বীজতলা ও ফসলের মাঠ। কয়েকদিন আগে বয়ে যাওয়া বন্যার ধকল না কাটতেই আবারো জেলার সবকটি নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরবাসীর মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ বন্যায় ঈদের আনন্দটুকুও ম্লান হতে পারে বলে জানিয়েছেন এখানকার মানুষেরা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সকালে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম ধরলা নদের শিমুল বাড়ি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৪ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদের সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেমি, ব্রহ্মপুত্র নদের দুধকুমার পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেমি ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


এছাড়াও অনান্য তিস্তাসহ অনান্য নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।

kurigram

জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার ২৬ ইউনিয়নের প্রায় ৪৫০টির মতো চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল এলাকা নতুন করে পানিবন্দি হতে যাচ্ছে। গত বন্যায় ডুবে যাওয়া ফসলের মাঠ শেষ হয়ে ৮০ হাজার কৃষকের প্রায় ১২৭ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করা হয়েছে। কৃষকের এই অপূরনীয় ক্ষতি কাটতে না কাটতে আবারও শুরু হয়েছে বন্যার বিধ্বংসী আচরণ। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এখানকার কৃষকেরা।

সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের কৃষক মকবুল হোসেন জানান, গত বন্যায় পাটের ক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন বীজতলা করেছি সেটাও পানিতে ডুবে গেল। ৪-৫ দিন যদি এই পানি থাকে তাহলে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে।


বিজ্ঞাপন


পাঁচগাছি  ইউনিয়নের আরাজি কদমতলা গ্রামের মৎস্যচাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার পুকুর একবার তলিয়ে প্রায় অর্ধেকের বেশি মাছ বের হয়ে গেছে। আবারো যদি বন্যা হয় তাহলে পুকুরের একটি মাছ থাকবে না। খুবই দুঃশ্চিন্তায় আছি।’

কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলায় এক হাজার পাঁচশো পুকুর তলিয়ে ২ কোটি ৩৭ লাখ পরিমান টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

kurigram

এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম এর মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, এ পর্যন্ত জেলায় ১৫শ পুকুরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৮৩ মেট্রিক টন মাছ ও ১৭ লাখ টাকার মাছের পোনা বন্যায় ভেসে গেছে। জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের মৎস্য চাষিদের সকল ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে আবারও বন্যার প্রকোপ দেখা দিলে কুড়িগ্রামের মৎস্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে এখানকার মৎস্য চাষিরা।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এর ফলে কুড়িগ্রামের ধরলা ও দুধকুমারের পানি সমতল বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামের পাটেশ্বরী পয়েন্টে ১৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতে ধরলা দুধকুমারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদ-নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে ২য় দফায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর