হিমালয়ের নিকটবর্তী ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতি বছরই শীত একটু আগেই অনুভূত হয়, কিন্তু এ বছর তা যেন আরও দ্রুত এসেছে। আশ্বিনেই উত্তরের এই জনপদে শীতের আমেজ পাওয়া যাচ্ছে। ভোরের আকাশে ঘন কুয়াশার চাদর আর রাত নামলেই হিমেল হাওয়া জানান দিচ্ছে শীতের উপস্থিতি।
সেপ্টেম্বর মাসের চলতি সপ্তাহে দেখা যায়, শীত এখনও সেইভাবে প্রকৃতিতে না আসলেও ভোরের শিশির বলে দিচ্ছে ঋতু বদলের দিন খুব কাছেই। ঘাসের ডগায় টলমল করা বিন্দু বিন্দু শিশির যেন শীতের আগমনী কবিতা লিখে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের মাটিতে। আর সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। ফলে আশ্বিন মাসের প্রথম ভাগেই ঠাকুরগাঁওবাসী পাচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা।
বিজ্ঞাপন
![]()
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা নামলেই কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় চারদিক। সকাল ৮টা পর্যন্ত মাঠঘাটে থাকে শিশিরের ভেজা ছাপ। সকালে হাঁটতে বের হওয়া মানুষদের অনেকেই গায়ে হালকা চাদর জড়িয়ে বের হচ্ছেন। ভোরবেলা সড়কপথে কুয়াশার কারণে যানবাহন চলাচল কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।
কৃষকরা বলছেন, শীতের আগাম উপস্থিতি ধান ও সবজির জন্য ভালো হলেও অতিরিক্ত ঠান্ডা পড়লে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
শহরের নিশ্চিন্তপুর এলাকার বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ বলেন, ভোরে মাঠে গেলে মনে হয় চারদিকে কুয়াশার চাদর বিছানো। মনে হয় শীত এসে গেছে। তবে শীত বেশি হলে সবজির ক্ষতি হওয়ার ভয় আছে।
বিজ্ঞাপন
-Thakurgaon_is_in_the_mood_for_early_winter_-_the_morning_is_drenched_in_dew,_the_surroundings_are_covered_in_fog_20250925_104235149.jpg)
তৈহিদুল ইসলাম জানান, ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকছে রাস্তা ও মাঠঘাট আর সন্ধ্যা নামলেই ঠান্ডা হাওয়া বইতে শুরু করে। কাজ শেষ করে ঘরে ফিরতে গরম চা ছাড়া উপায় থাকে না।
জিল্লুর রহমান বলেন, এবার মনে হচ্ছে শীত একটু তাড়াতাড়িই এসেছে। সন্ধ্যা নামতেই কুয়াশা নেমে আসে, সকাল পর্যন্ত শিশির ভেজা পরিবেশ থাকছে। শীতের শুরুতেই সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা ও জ্বরের রোগী বেড়ে যায়। শিশু ও বয়স্কদের প্রতি এই সময়ে বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
শীতের এই আগাম ছোঁয়া শুধু আনন্দই নয়, উদ্বেগও বাড়াচ্ছে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য। তবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, শীত মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
![]()
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা ঢাকা মেইলকে বলেন, শীতের প্রকোপ থেকে অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষদের সুরক্ষা দিতে জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। বরাদ্দ এলেই সরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রমও শুরু করা হবে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, উত্তরের জেলা হওয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ে অন্য এলাকার তুলনায় শীত বরাবরই আগে আসে। ইদানীং আবহাওয়ার কিছুটা মিশ্র আচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে। ফলে ভোর ও সকালে শীতের আমেজ আরও স্পষ্টভাবে অনুভূত হবে।
![]()
তেতুঁলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, এখনো তাপমাত্রা একেবারে নিচে নামেনি। তবে শিশির ভেজা ভোর, কুয়াশার চাদরে মোড়া সকাল আর শিহরণ জাগানো বাতাস আগাম শীতের ইঙ্গিত বহন করছে। অক্টোবর মাস নাগাদ শীত আরও স্পষ্ট হবে। চলতি সপ্তাহে সর্বনিম্ন ২২.৮ ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
প্রতিনিধি/টিবি

