মামলা মীমাংসার কথা বলে ১৮ হাজার টাকা নেওয়ার পর আবার ৩০ হাজার টাকা দাবির অভিযোগ উঠেছে গাজীপুরের কালিয়কৈর থানার এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী যুবকের মা গেল মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাজীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
অভিযুক্ত উপপরিদর্শকের নাম (এসআই) মো. ওমর ফারুক। তিনি গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত আছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার জালুয়াভিটি গ্রামের এক নারী এলাকায় দেহ ব্যবসাসহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ওই নারীর কাজে বাধা দিলেই তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। এর আগেও মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগও পাওয়া গেছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর উপজেলার জালুয়াভিটি গ্রামের পিকআপ চালক আব্দুল মমিনের নামে একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার বিষয়ে জানতে গেলে মমিনের মা মনোয়ারা বেগম এসআই ওমর ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে তিনি মৌচাক পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে তাকে ১৮ হাজার টাকা দেন। সেই টাকা দেওয়ার পর আবারও তার বাড়িতে গিয়ে আরও ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন ওই এসআই ওমর ফারুক। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে ভয়ভীতিও দেখান তিনি। ওই ঘটনায় মনোয়ারা বেগম মঙ্গলবার গাজীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
মনোয়ারা বেগম অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, আমাগো পাড়ার একটা মেয়ে আছে। অসামাজিক কাজ করে, যদি কেউ কিছু কয় তারে ধর্ষণচেষ্টা মামলা দেয়। এ পর্যন্ত মোজাম্মেল, নূর ইসলাম, মোতালেব,আমার ছেলে মমিনসহ ৬ জনকে ফাঁসাইছে। আমার ছেলের নামেও ফাঁড়িতে অভিযোগ দেয়। পরে ফাঁড়ির পুলিশ ওমর ফারুক আমাকে বিরক্ত করে। ওমর ফারুক টাকা চাইছে, ১৮ হাজার দিছি। বলছে মেয়ের সঙ্গে না, ওসির সঙ্গে মিমাংসা করছি। এই বলে ১৮ হাজার টাকা নিছে।
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন পর আবার ৩০ হাজার টাকা চাইছে, আমি না করছি, বলছি টাকা দিতে পারবো না। ওই দিনই আমার পোলার নামে মিথ্যা মামলা দিছে। এক্কেরে অহেতুক মামলা দিছে, আপনারা তদন্ত করে দেখতে পারেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আমি শুয়ে আছি, এমন সময় ওমর ফারুক তিনজন পুলিশ নিয়ে আইছে। আমি কইলাম কেডা কয় আইনের লোক। কইলাম আপনারা কেন আইছেন? কয় আপনার ছেলেরে ধরতে আইছি। টাকা যদি ৩০ হাজার না দেস, তোর পোলারে গ্রেফতার করবো, বাড়িঘরও ভাঙচুর করবো, তোর বাড়িঘর থুমু না।
এসআই ওমর ফারুক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিষয়টি এই রকম না। তাদের আপস হওয়ার সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু সমাধান করতে পারেনি। পরে মামলা নেওয়া হয়েছে। মামলা নিয়েছি বলেই এখন এরকম মিথ্যা অভিযোগ করছে আমার নামে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান বলেন, অভিযোগকারী মোনোয়ারা বেগমের ছেলে আসামি পক্ষ। আর আসামি পক্ষের লোকজন পুলিশকে বিব্রত করার জন্য এমন অভিযোগ করতে পারেন। বিষয়টি তদন্ত ছাড়া আসলে বলা যাচ্ছে না।
প্রতিনিধি/টিবি

