রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্যকোটা ইস্যুতে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে এখনও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, জনসংযোগ প্রশাসকসহ ১০ জনকে।
এর আগে দুপুরে উপ-উপাচার্যদ্বয়ের বাসভবনে শিক্ষার্থীরা তালা দিলে বাসভবনের ভেতরে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান। একপর্যায়ে তারা জুবেরী ভবনের দিকে আসতে থাকলে শিক্ষার্থীরাও স্লোগান দিতে দিতে তাদের পেছনে আসে।
জুবেরী ভবনের বারান্দায় আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক এবং ছাপাখানার এক কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের আটকানোর চেষ্টা করলে একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খানকে চারপাশ থেকে আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে হাতাহাতির একপর্যায়ে উপ-উপাচার্য জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় চলে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে ভবনের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় অবরুদ্ধ করে রাখেন। এরই মধ্যে সেখানে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হন।
![]()
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, একটি মীমাংসিত ইস্যু নিয়ে প্রশাসন যে অবস্থান নিয়েছে আমরা তা গভীরভাবে নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা কাল থেকে শান্তিপূর্ণ অনশনে রয়েছি, কিন্তু প্রশাসন কোনো গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ নেয়নি। আজ আমাদের ওপর যে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে তা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। আমি সব শিক্ষার্থীকে আহ্বান জানাই—শান্তিপূর্ণভাবে যোগ দিন এবং আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা ময়দান ছাড়ব না।
রাবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, আর মাত্র চারদিন পর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি মীমাংসিত ইস্যু—পোষ্যকোটাকে সামনে এনে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষও ঘটে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আজ এখানে সব দলমত নির্বিশেষে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে এসেছে। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য—এই অযৌক্তিক পোষ্য কোটাকে আর ফিরতে দেওয়া যাবে না। ইতোমধ্যেই এই কোটা বাদ দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম ও শ্রেণি কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। অথচ রাকসু নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে আবার এই অযৌক্তিক কোটাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা স্পষ্টতই নির্বাচন বানচালের উদ্দেশে করা হচ্ছে।
![]()
তিনি আরও জানান, ইসলামী ছাত্রশিবির এ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই অযৌক্তিক পোষ্যকোটার ইস্যুর অবসান না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
আন্দোলন বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন বলেন, পোষ্যকোটার বিষয় তো আমার একার কোনো সিদ্ধান্ত না, প্রশাসনের সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে আমাকে বাসায় যেতে দিবে না, খেতে দিবে না, এমন আন্দোলন আমি কখনও দেখিনি। এটা কি ধরনের আন্দোলন।
প্রতিনিধি/এসএস

