গ্রাম-বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নৌকা বাইচ। আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজ হারিয়ে যেতে বসেছে উৎসবটি। প্রাচীন এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে নাটোর চলনবিলে হাজারও দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নাটোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চলনবিল গুরুদাসপুর উপজেলার বিলশায় নৌকা বাইচ উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন।
বিজ্ঞাপন
![]()
নৌকা বাইচ দেখতে সকাল থেকেই বিলে দূর-দূরান্ত থেকে আসতে থাকে দর্শকরা। দুপুরে কানাই কানাই ভরে উঠে বিলের রাস্তাঘাট। অনেকে পরিবার, প্রিয়জন ও বন্ধুদের সঙ্গে নৌকা বাইচ উপভোগ করতে হাজির হন চলনবিল বিলশাঘাটে। অনেকে পরিবার নিয়ে নৌকা চড়ে উপভোগ করেন এ উৎসব। নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে আশপাশের বাড়িতে জামাই-মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। বাড়িতে বাড়িতে চলে পিঠা-পায়েসসহ নানা পদের খাবারের আয়োজন। বাড়ির বৌ-ঝিয়েরা কাজ শেষে নৌকা বাইচ দেখতে বিলপাড়ে জমে বসেছেন। আনন্দ ও উল্লাসে মেতে ওঠেন তরুণ ও তরুণীরা। বৃদ্ধ থেকে শুরু করে শিশুরাও বাদ যায়নি এ নৌকা বাইচ উৎসবে। উৎসবকে কেন্দ্র করে বিলপাড়ে বসেছে গ্রামীণ মেলা।

নৌকাবাইচ উৎসব দেখতে আসা ইব্রাহিম খলিল বলেন, নৌকা বাইচ উপলক্ষে বোনের বাড়িতে এসেছি। অনেক দিন পর নৌকা বাইচ দেখলাম। পরিবারের সবাই মিলে উপভোগ করছি, খুব ভালো লাগছে। এখন তো তেমন নৌকা বাইচ দেখাই যায় না।
বিজ্ঞাপন
সাইফুল ইসলাম বলেন, ছোট বেলায় নদী, বিলে প্রচুর নৌকা বাইচ হতো। এখন তা দেখাই মিলে না। কত দূরে গিয়ে বন্ধুরা নৌকা বাইচ দেখতে যেতাম। আজ অনেক বছর পর আবার এ নৌকাবাইচ দেখতে এসেছি। প্রচুর মানুষ এসেছে নৌকা বাইচ দেখতে।
সংবাদকর্মী তহুরা বানু বলেন, অনেক বছর ধরে নৌকা বাইচ উৎসব দেখা হয়নি। আজ সংবাদ সংগ্রহে এসে দারুণভাবে উপভোগ করলাম। অনেক আনন্দ পেয়েছি। গ্রাম বাংলার এ উৎসব এখন আর দেখাই যায় না। জেলা প্রশাসন অনেক সুন্দরভাবে এ বাইচের আয়োজন করেছেন। সেজন্য অনেক ধন্যবাদ।
এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় ছোট-বড় ২১টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। প্রথম পুরস্কার একটি মোটরসাইকেল, দ্বিতীয় পুরস্কার একটি রেফ্রিজারেটর ও তৃতীয় পুরস্কার একটি টিভি।
প্রতিনিধি/এসএস

