নড়াইল সদর উপজেলায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে ইব্রাহিম মোল্যা (৪২) নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে জেলার গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, তাকে আটক করা হয়নি।
গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ভোরে সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের তপনভাগ গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে ইব্রাহিমকে তুলে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তাঁর কোনো খোঁজ পায়নি পরিবার। তিনি ওই গ্রামের আবদুর রহমান মোল্যার ছেলে এবং পেশায় একজন কৃষক।
বিজ্ঞাপন
পরিবারের সদস্যদের দাবি, সোমবার ভোররাতে ৭–৮ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ইব্রাহিমের বাড়ির দরজায় ধাক্কা দেয়। ইব্রাহিম দরজা খুললে তাঁরা জানান, একটি মামলার প্রয়োজনীয়তায় তাঁকে ডিবি অফিসে নিয়ে যেতে হবে। এরপর তাঁকে সঙ্গে নিয়েই চলে যায় তারা। পরে সকাল ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যরা নড়াইল ডিবি অফিস ও থানায় খোঁজ নিতে গেলে জানতে পারেন, ইব্রাহিমকে কেউ আটক করেনি।
ইব্রাহিমের স্ত্রী ইরানী খানম, ভাই রুহুল আমিন এবং চাচা ফজলে করীম অভিযোগ করে বলেন, পারিবারিকভাবে একটি জলমহাল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রতিপক্ষদের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। ২০১৭ সালে ওই বিরোধের জেরে ইব্রাহিমের বাবা খুন হন। এ ঘটনায় ইউসুফ মোল্যা, রসুল মোল্যাসহ কয়েকজনকে আসামি করে নড়াইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার বাদী এবং ১ নম্বর সাক্ষী ছিলেন ইব্রাহিম। এছাড়া ওই আসামিদের সঙ্গে ইব্রাহিমের আরও কয়েকটি মামলা ও বিরোধ চলমান রয়েছে। মাঝেমধ্যে প্রতিপক্ষরা তাকে হুমকি-ধামকি দিত বলে অভিযোগ পরিবারের।
তাঁদের দাবি, এসব পুরনো বিরোধের জের ধরেই প্রতিপক্ষরা এলাকার বাইরে থেকে ভাড়াটে লোক এনে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে ইব্রাহিমকে অপহরণ করেছে, যাতে কেউ তাদের চিনতে না পারে। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, ইব্রাহিমের ক্ষতি করা হতে পারে। প্রশাসনের প্রতি তাঁরা ইব্রাহিমের অবস্থান দ্রুত শনাক্ত করে উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইব্রাহিমের বাবার হত্যা মামলার কয়েকজন আসামির বাড়িতে গেলে দেখা যায়, বাড়িগুলো পুরুষশূন্য। বাড়ির নারীরা তাঁদের কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি এবং মুঠোফোন নম্বরও দিতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে অভিযুক্তদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিজ্ঞাপন
নড়াইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ্ দারা খান বলেন, ‘সোমবার তপনভাগ এলাকায় ডিবি পুলিশের কোনো অভিযান হয়নি। কাউকে আটকও করা হয়নি।’
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘ইব্রাহিম নিখোঁজের ঘটনায় তাঁর স্ত্রী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।’
প্রতিনিধি/একেবি

