দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের এক প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম নিয়েছে এক বিস্ময়কর প্রতিভা। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই স্থানীয় কিশোর অনুকূল রায় তৈরি করেছেন একটি বিমান। নাম দিয়েছেন— 'দ্যা রয়েল স্কাই–১১০'।
সম্প্রতি আকাশে প্রথমবার বিমানটি উড়তেই গোয়ালপাড়া গ্রামে দেখা দেয় তুমুল কৌতূহল। হঠাৎ আকাশে ছোট্ট বিমান উড়তে দেখে শিশুসহ গ্রামের প্রবীণরা দৌড়ে আসেন ঘটনাস্থলে। সবাই মুগ্ধ হয়ে দেখেন অনুকূলের হাতে তৈরি উড়ন্ত স্বপ্নযান।
বিজ্ঞাপন
![]()
জানা যায়, বিমানটি তৈরিতে তার সময় লেগেছে দুই বছরেরও বেশি। সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে বাবার সহযোগিতায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে এ প্রকল্পে। কর্কশিট দিয়ে তৈরি কাঠামোর সঙ্গে তিনি জুড়েছেন— রেডিও কন্ট্রোলার, লিপো ব্যাটারি, প্রপেলার, স্পিড কন্ট্রোলার, বিএলডিসি মোটর, কার্বো মোটর, ছোট ফ্যান ও চাকা। সবকিছুই রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
অনুকূল রায় বলেন, বিমানটি তৈরি করতে আমার দুই বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে কাজটি শেষ করেছি। এর আগে ২০২৩ সালে একটি রোবট তৈরি করেছিলাম। সম্প্রতি আঙ্গারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছি। আমি চাই আমার সৃজনশীল চিন্তাগুলো কাজে লাগিয়ে দেশের জন্য কিছু করতে। সরকার বা বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা পেলে আরও বড় কিছু উদ্ভাবন করতে পারব।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় শিক্ষক পরাণ চন্দ্র রায় বলেন, অনুকূলের মতো তরুণরা আমাদের ভবিষ্যতের আলোকবর্তিকা। তার এই অর্জন শুধু গ্রাম নয়, পুরো উপজেলাকে গর্বিত করেছে।
অনুকূলের বাবা রনজিৎ রায় বলেন, আমার সামর্থ্য সীমিত হলেও আমি সবসময় ছেলের স্বপ্ন পূরণে পাশে থাকার চেষ্টা করি। সম্প্রতি তার তৈরি বিমান এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সংশ্লিষ্টরা যদি নজর দেন, তবে ছেলের স্বপ্ন আরও বড় পরিসরে বাস্তবায়িত হতে পারে।
![]()
গ্রামবাসীর মতে, অনুকূলের এই উদ্ভাবন শুধু তার পরিবারের নয়, বরং পুরো এলাকার গর্ব ও সুনাম বৃদ্ধি করেছে। তাদের আশা, ভবিষ্যতে অনুকূলের হাত ধরে আরও বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়ে এলাকার নাম আরও উজ্জ্বল হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার বলেন, অনুকূলের এই উদ্ভাবনী সাফল্য প্রশংসনীয়। এ ধরনের উদ্ভাবনী উদ্যোগকে উৎসাহিত করা হবে।
প্রতিনিধি/এসএস

