শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

স্ত্রীর পরিকল্পনায় খুন হন যুবদল নেতা শামীম, আদালতে স্বীকারোক্তি

জেলা প্রতিনিধি, খুলনা
প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৩৬ পিএম

শেয়ার করুন:

স্ত্রীর পরিকল্পনায় খুন হন যুবদল নেতা শামীম, আদালতে স্বীকারোক্তি
ভুক্তভোগী সাতক্ষীরা জেলার তালা থানাধীন ৭ নম্বর ইসলামকাঠি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম শামীম।

পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর পরিকল্পনায় খুন হন যুবদল নেতা শামীম। ফুফাতো ভাইকে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজে লাগান ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি। হত্যা মিশন বাস্তবায়নে নিজ বাড়িতে ডেকে নেন ভাইকে। পরবর্তীতে তার দেখানো পন্থায় ফুফাতো ভাই ওবায়দুল্লাহ সাতক্ষীরা জেলার তালা থানাধীন ৭ নম্বর ইসলামকাঠি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম শামীমকে হত্যা করে।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন।


বিজ্ঞাপন


আদালতে স্ত্রী বৃষ্টির দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার ব্যাখ্যায় তিনি জানান, বিয়ের পর থেকে তিনি স্বামীর সঙ্গে সুখী ছিলেন না। প্রায়ই তাকে মারধর করতেন যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম। মারধরের ঘটনা থেকে তার মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আর এ ক্ষোভ মেটাতে গিয়ে শামীমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বৃষ্টি। শামীমকে হত্যার ৩ দিন আগে ফুফাতো ভাইকে বাড়িতে ডেকে নেন। হত্যাকাণ্ডের আগের দিন বৃষ্টি তার ফুফাতো ভাইকে শারীরিক নির্যাতনের কথা জানায়। এ জন্য স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে বলে বৃষ্টি তার ভাইকে জানায়। শামীমকে হত্যা করতে পারবে কিনা জানতে চাইলে সে সম্মতি জানায়।

আরও পড়ুন

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বাবা ও ছেলে খুন

হত্যাকাণ্ডের দিন রাতের খাবার খেয়ে শামীম ও তার স্ত্রী তৃতীয় তলার ফাঁকা ফ্লাটে আসে। এর কিছুক্ষণ পর বৃষ্টির ভাই ওই ফ্লাটে আসে। কীভাবে কোপ দিতে হবে তা বৃষ্টি ইশারায় দেখাতে থাকে। একপর্যায়ে ছোরা দিয়ে শামীমের ঘাড়ে কোপ দেয় ওবায়দুল্লাহ। এরপর তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের পর তারা দু’জন ছাদে যায়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটি পার্শ্ববর্তী জলাশয়ে ফেলে দেয় এবং তারা দু’জনই পুনরায় দ্বিতীয়তলায় এসে শামীমের মায়ের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে থাকে।

তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডটি ক্লুলেস ছিল। তাছাড়া নিহত শামীমের মা রশিদা খাতুন এ ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্‌ঘাটনে পুলিশের একটি চৌকস দল কাজ করে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তাদের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে শামীমের স্ত্রী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। বৃষ্টির ফুফাতো ভাইয়ের বয়স কম হওয়ায় তাকে যশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_received_1829096704707713

উল্লেখ, গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ডুমুরিয়ার আঠারোমাইল এলাকার তিনতলায় নিজ বাড়িতে খুন হন যুবদল নেতা শামীম হোসেন। তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। নিহত শামীম সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

গত রোববার বিকেলে নিহত যুবদল নেতার মা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রশিদা বেগম অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করেন। তদন্তে শামীমের মাদকসংশ্লিষ্টতা, পারিবারিক অশান্তি, আর্থিক লেনদেন ও রাজনৈতিক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর