শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

টুং টাং শব্দে মুখরিত নাটোরের কামারপাড়া

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৪ জুন ২০২২, ১২:৩৭ পিএম

শেয়ার করুন:

টুং টাং শব্দে মুখরিত নাটোরের কামারপাড়া

লোহার পাতে হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে নাটোরের কামারপাড়াগুলো। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। দিন-রাত ছুরি, ছোরা, দা, চাপাতি, বটি তৈরির কাজে ব্যস্ত তারা। কামারিদের যেন দম ফেলার সময়ও নেই। এভাবে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে তাদের কর্মব্যস্ততা।

নাটোর শহরের বড়হরিশপুর, কামারপাড়া, পালপাড়া, তেবাড়িয়া, হুগলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।


বিজ্ঞাপন


দগদগে আগুন থেকে গরম লোহার পাত পিটিয়ে তৈরী করা হচ্ছে পশু জবাই করার নানা সরঞ্জাম। এ কাজে কেউ কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন, কেউ আবার লোহা পেটাপিটি করছেন। দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ক্রেতারা। কেউ দা কিনছেন, কেউ ছুরি, কেউবা আবার চাপাতি কিনছেন। 

কামারপাড়ায় প্রকারভেদে বিভিন্ন দামে এসব সরঞ্জাম বিক্রি করা হচ্ছে। বড় ছুরির দাম ১০০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকায়, ছোট ছুরির ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়। অন্যদিকে চাপাতি বিক্রি হচ্ছে কেজি হিসেবে। প্রতি কেজি চাপাতি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বটি প্রতি পিস ৩০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
nator kamaarবড়হরিশপুর কামারপাড়ার শ্রী রতন কুমার কর্মকার বলেন, ৩০ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে রয়েছেন তিনি। সারা বছর তেমন কাজের চাপ না থাকলেও বছরে কোরবানি ঈদে কাজের ব্যস্ততা দু’গুণ বেড়ে যায়। তবে বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম বেশি হওয়ায় লাভ খুব কম হচ্ছে বলে তিনি জানান।

শহরের হুগলবাড়িয়া এলাকার কামারি শ্রী নিরেণ কর্মকার বলেন, কোরবানির ঈদের এখনও কাজ শুরু হয়নি। তবে কয়েক দিনের মধ্যই কাজ শুরু হবে। আগে কোরবানির এক মাস আগে থেকে কাজ শুরু করে শেষ করতে পারতাম না। এখন কাজ নেই বললেই চলে।

শহরের তেবাড়িয়া এলাকার কামারি নিপেন কর্মকার বলেন, রোববার হাটের দিন আসলে কাজের চাপ কিছুটা বাড়ে। বাকী দিনগুলো অলস ভাবে চলে যায়। বিশেষ করে কোরবানি ঈদ আসলে এক দেড় মাস কাজের চাপ কিছুটা বেড়ে যায়। বর্তমানে কয়লা ও লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় লোহার সারঞ্জামের দাম অনেক বেড়েছে।


বিজ্ঞাপন


পালপাড়া এলাকার কামারি শ্রী রঞ্জিত সরকার বলেন, প্রায় ২৫ কছর ধরে এ কাজ করছি। সারা বছর তেমন এসব লোহার সরঞ্জাম তৈরীর কাজ থাকে না। বছরে কোরবানির ঈদ আসলে একটু চাপ বাড়ে। আগের মতো এ কাজে তেমন আয় হয় না। বাবা, দাদুরা এ কাজ শিখিয়ে গেছেন। তাদের পেশা ধরে রেখেছি। এখন অন্য কোনো পেশায় যেতে পারছি। বয়স হয়েছে।
natore kamar কামারপাড়ার এলাকার সজল কুমার কর্মকার বলেন, সারাবছর এ সময়ের জন্য অপেক্ষায় থাকি। কোরবানিতে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী জিনিসপত্র তৈরী করাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য দিন রাতে কাজ করে এসব সরঞ্জাম তৈরি করা হয়। 

তৌফিস উদ্দিন নামে এক ক্রেতা বলেন, কোরবানির গরুর মাংস কাটার জন্য নতুন চাপাতি কিনতে এসেছি। তৈরি করা তেমন ভালো চাপাতি পাচ্ছি না। তাই এক কেজি ওজনের ইস্পাত কিনে নতুন চাপাতি বানাতে দিলাম। এবছর চাপাতির দাম অনেক বেশি মনে হচ্ছে।

বটি কিনতে আসা আনোয়ার হোসেন বলেন, খাঁসি মাংস কাটার জন্য নতুন বটি কিনতে এসেছি। ৩০০ টাকায় একটি বটি নিলাম। গতবার এ বটি ২৫০ টাকায় কিনেছি, এ বছর দাম কিছুটা বেশি।

প্রতিনিধি/এএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর