রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানো সেই প্রধান শিক্ষিকা বরখাস্ত

জেলা প্রতিনিধি, পিরোজপুর
প্রকাশিত: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১৯ এএম

শেয়ার করুন:

শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানো সেই প্রধান শিক্ষিকা বরখাস্ত
শামীমা ইয়াসমিন।

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াসমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ।

সোমবার (৪ আগস্ট) বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।


বিজ্ঞাপন


প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াসমিনের দাবি, বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো কোনো অন্যায় নয়, বরং এটি তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ।

তিনি বলেন, ‘আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোকে আমি গর্বের বিষয় মনে করি।’

এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা অফিস তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকেই এটিকে স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর হস্তক্ষেপ এবং রাজনৈতিক প্রভাবের ফল বলে মন্তব্য করেছেন। কেউ কেউ প্রধান শিক্ষিকাকে ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর” বলেও অভিহিত করেছেন।

এদিকে, এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষক সমাজের একটি অংশ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, আরেক অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।


বিজ্ঞাপন


এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে তাঁর স্বামী মো. হাফিজুর রহমান ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেছিলেন; ‘আপনার নামে একটা চিঠি আছে, অফিসে এসে নিয়ে যাবেন।’ তবে বরখাস্তের বিষয়টি আমাদের জানানো হয়নি।’

নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে উক্ত বিদ্যালয়ে তদন্ত করে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতেই কর্তৃপক্ষ প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন। তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে বিভাগীয় মামলাও হতে পারে। এমনকি স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও আসতে পারে।’

উল্লেখ্য, গত ৩ আগস্ট, সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াসমিন বিদ্যালয়ের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোর পর ঘটনাটি উপজেলাজুড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এর বিরোধিতা করা হলে প্রধান শিক্ষিকা সাংবাদিকদের বলেন,

‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে। দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে আমার বাবা মইনউদ্দীন মাস্টার মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। সেই যুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হতো না। তাই বিদ্যালয় থেকে এই ছবি আমি সরাব না।’

তবে জনগণের চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত তাকে ছবিটি নামাতে বাধ্য হতে হয়। এ ঘটনার ধারাবাহিকতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর