মাগুরা শালিখার হরিশপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক আল আমিন হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও অপর একজনকে ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন যশোরের একটি আদালত।
রোববার (৩ আগস্ট) বিকেলে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক জয়ন্তী রাণী দাস এক রায়ে এ সাজা দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি এসএম আব্দুর রাজ্জাক।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মাগুরা শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে জুয়েল খান, সেলিম হোসেনের ছেলে হারুন অর রশীদ ও যশোর সদরের মথুরাপুর গ্রামের হজরত আলীর ছেলে উত্তর ললিতাদাহ গ্রামের বাসিন্দা আলামিন।
দুই বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পিরোজপুর সদরের সবুজনগর গ্রামের সুলতান মল্লিকের ছেলে ও শহরের চাঁচড়া রায়পাড়ার জনৈক মুকুল প্রফেসরের বাড়ির ভাড়াটিয়া রাসেল মোল্যা।
বিজ্ঞাপন
সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হারুন অর রশীদ কারাগারে আটক আছেন। অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জুয়েল কারাগার থেকে আদালতে হাজিরা দিতে এসে সম্প্রতি কোর্ট পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে যায়। আর জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক আছে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আলামিন। এছাড়া সাজাপ্রাপ্ত রাসেল মোল্যা কারাগারে আটক রয়েছে।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, মাগুরা শালিখা উপজেলার হরিশপুর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে আল আমিন ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর বিকেলে আল আমিন বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে ভাড়ায় চালানোর উদ্দেশে বের হন। রাতে আল আমিন বাড়ি না ফেরায় স্বজনেরা তার মোবাইলে কল করে বন্ধ পান। পরদিন দুপুরে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে আল আমিনের স্বজনেরা জানতে পারেন তার ইজিবাইক যশোর চাঁচড়া ফাঁড়ি পুলিশ উদ্ধার করেছে। একইসঙ্গে বাঘারপাড়ার বুধোপুর গ্রামের রাস্তার পাশ থেকে ইজিবাইক চালক আল আমিনের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা।

এ ঘটনায় ১১ ডিসেম্বর নিহত আল আমিনের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে বাঘারপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২৫ ডিসেম্বর যশোরের র্যাব ইজিবাইকচালক আল আমিন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই চারজনকে আটক করে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকায় আসামি জুয়েল, হারুন ও আলামিনকে এবং চোরাই ইজিবাইক ক্রয় করায় রাসেলকে অভিযুক্ত করে ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হরষিত রায়।
দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামি জুয়েল, হারুন ও আলামিনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাদের প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড ও ৪০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন। এ মামলার অপর আসামি রাসেল মোল্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
প্রতিনিধি/এসএস

