ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শিক্ষক নিয়োগে সার্কুলার ছাড়া প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই দাবি করে শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ইবিতে ভিসি নিয়োগ হওয়ার পরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ভিসি নিয়োগ হয়েছে। তারা সার্কুলার দেওয়ার পরে যাদের প্রভাষক নিয়োগ হয়েছে তারা এখন প্রফেসর হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে শুধুমাত্র সার্কুলার ছাড়া এখনও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ডিপার্টমেন্টও আছে যেই ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক মাত্র দু’জন।
তিনি প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, শিক্ষক নিয়োগে কেন এত দেরি হচ্ছে আপনাদের? সুবিধাজনক সময়ে যখন টাকা খাওয়া যাবে তখন শিক্ষক নিয়োগ দেবেন? এই সমস্ত তালবাহানা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলবে না।
বিজ্ঞাপন
![]()
শনিবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টায় নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারের দাবিতে সংগঠনটির আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুল হাসান বলেন, ছাত্র সংসদ গঠনে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন বলার পরেও আইনের দোহাই দিয়ে প্রশাসন ছাত্র সংসদ গঠনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কিন্তু ইবির পরে প্রতিষ্ঠিত অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ গঠনে পদক্ষেপ নিয়েছে। আপনারা কেন পারছেন না? এই ভয়ে যে চেয়ার চলে যাবে? শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করলে তারাই আপনাদের চেয়ারে রাখবে। আর না হয় হাসিনাকে যেভাবে সরিয়েছে আপনাদেরও সেভাবে সরাবে।
![]()
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবের এক বছরে এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লেখযোগ্য সংস্কার চেখে পড়ে নাই। আমরা ভেবেছিলাম জুলাইয়ের পরে আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে না, আমরা কথা বলার অধিকার পাব, সনদপত্র তুলতে ভোগান্তি হবে না, চিকিৎসা কেন্দ্র সংস্কার হবে, ক্যাম্পাস ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত হবে, গুম হওয়া ওয়ালীউল্লাহ-মুকাদ্দাস ভাইকে ফেরত পাব। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এর মধ্য দিয়ে প্রশাসন জুলাই বিপ্লবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। ক্যাম্পাস কতটা অনিরাপদ হলে আমাদের ভাইয়ের লাশ পুকুরে পাওয়া যায়। কিন্তু এর নির্ভরযোগ্য কোনো ফুটেজ বা তথ্য প্রশাসন দিতে পারেনি।
নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তারা। অন্যথায় প্রশাসনকে আসসালামু আলাইকুম বলতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনটি।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সংগঠনটি। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
![]()
এসময় তারা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘যদি না হয় সংস্কার, এই প্রশাসন কি দরকার’, ‘পুকুরে লাশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘সাজিদ হত্যার তদন্ত, করতে হবে করতে হবে’, ‘অনলাইন পেমেন্ট চালু কর, ভোগান্তি দূর কর’, ‘কর্মকর্তা জমিদার, লাঞ্চ করতে দিন পার’, ‘ইবিতে ছাত্রসংসদ, চালু কর করতে হবে’, ‘ইকসু নিয়ে টালবাহানা, আর না আর না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের হাতে হল ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়ার পানি ও খাবারের মান নিশ্চিত করতে হবে, স্বৈরশাসনের সময় বর্ধিত ও অযৌক্তিক ফি কমাতে হবে, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে, ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাস ভাইয়ের সন্ধান চাই ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
প্রতিনিধি/এসএস

