খুন, অপহরণ, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির অভিযোগে টানা ২৬ বছর কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান নাছির উদ্দিন চৌধুরী ওরফে ‘শিবির নাছির’। মুক্তির ১১ মাস পর, ৬০ বছর বয়সে তিনি বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। কুলসুমা বেগম নামের এক নারীর সঙ্গে তার বিয়ে সম্পন্ন হয় গত বৃহস্পতিবার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বিয়ে ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে।
নাছিরের বিরুদ্ধে ছিল মোট ৩৬টি মামলা— যার মধ্যে জোড়া খুন, অপহরণ, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির মতো অভিযোগ ছিল। এর মধ্যে ৩১টি মামলায় তিনি খালাস পান। বাকি মামলাগুলোর মধ্যে দুটিতে সাজা হলেও তা ইতোমধ্যে কারাভোগে শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন। শেষ মামলায় জামিনের মাধ্যমে তিনি ২০২৩ সালের ১১ আগস্ট চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
বিজ্ঞাপন
কারা সূত্র অনুযায়ী, ১৯৯৮ সালের ৯ এপ্রিল নাছির কারাগারে যান এবং দীর্ঘ ২৬ বছর বন্দী থাকেন। বর্তমানে তিনি ফটিকছড়ির তিনটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে বিচারাধীন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নাছিরের সঙ্গে হাটহাজারীর ছিপাতলী গ্রামের কুলসুমা বেগমের বিয়ে সম্পন্ন হয়। দেনমোহর ধার্য করা হয় ১৫ লাখ টাকা। বিয়েতে মেয়েপক্ষ থেকে কোনো যৌতুক নেওয়া হয়নি। নাছিরের পরিবার জানায়, তিনি এখন সংসারী হয়ে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে চান।
বিচার সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রাবাসে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় নাছিরের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এর আগে ২০০৮ সালে এক অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়েছিল। তবে ২০১৫ সালে ছাত্রনেতা জমির উদ্দিন হত্যা মামলায় তিনি খালাস পান। জমিরকে ১৯৯৪ সালে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এছাড়া নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরি ও হাটহাজারীর তিনটি খুনের মামলায়ও তিনি খালাস পান।
নাছিরের আইনজীবীর দাবি, তাকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলায় জড়িয়েছিল। সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিনি একে একে মামলাগুলো থেকে মুক্ত হন।
বিজ্ঞাপন
বিয়ের পর নাছির জানান, তিনি এখন ব্যবসা করে পরিবার নিয়ে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে চান এবং সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।
অন্যদিকে, ইসলামী ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগরের এক নেতা দাবি করেন, নাছির শিবিরের কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মী ছিলেন না। জনমুখে তার নামের সঙ্গে ‘শিবির’ শব্দটি জড়িয়ে গেলেও তিনি সংগঠনের কোনো কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন না।
প্রতিনিধি/একেবি

