রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

কাদের মির্জার ক্যাডার থেকে রিয়াদ যেভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতা

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী
প্রকাশিত: ২৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৫ পিএম

শেয়ার করুন:

কাদের মির্জার ক্যাডার থেকে রিয়াদ যেভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতা
সোলায়মান রিয়াদ।

নোয়াখালীর আলোচিত রাজনীতিবিদ কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ ক্যাডার হিসেবে রাজনীতিতে যাত্রা শুরু করেছিলেন সোলায়মান রিয়াদ। একসময় যিনি পরিচিত ছিলেন রাজনৈতিক সহিংসতায় যুক্ত একজন কর্মী হিসেবে, তিনিই এখন পরিচয় দিচ্ছেন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ আহ্বায়ক এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রনেতা হিসেবে।

তবে তার এই পরিবর্তন নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। কারণ খুব অল্প সময়েই রিয়াদের জীবনযাত্রায় এসেছে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন—পরিধানে এসেছে বিলাসিতা, বদলে গেছে বাসস্থান, এবং সম্প্রতি জড়িয়েছেন আলোচিত এক ব্ল্যাকমেইল মামলায়।


বিজ্ঞাপন


গত রোববার, ঢাকার গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সাবেক নারী এমপি শাম্মি আহমেদের বাসায় প্রবেশ করেন রিয়াদ ও তার সহযোগী কাজী গৌরব অপু। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা ৪০ লাখ টাকা দাবি করেন এবং তা না দিলে এমপির বিরুদ্ধে ‘পুলিশি ব্যবস্থা’ নেওয়ার হুমকি দেন।
বাসার লোকজন গুলশান থানা পুলিশে জানালে, তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে রিয়াদসহ পাঁচজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযুক্ত গৌরব অপু অবশ্য দৌড়ে পালিয়ে যান।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রিয়াদ ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বসুরহাট পৌরসভার তৎকালীন মেয়র কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। অস্ত্রধারী ক্যাডার হিসেবেও তার নাম উঠে আসে বিভিন্ন সময়ে। তার গ্রামের বাড়ি সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নে। বাবার পেশা ছিল রিকশা চালানো। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ছিল খুবই খারাপ, এমনকি ঈদের কোরবানিতেও পশু কিনতে পারতেন না তারা। অথচ মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে রিয়াদ নিজ গ্রামে ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ করেছেন, পরেছেন বিদেশি ব্র্যান্ডের পোশাক, এবং চালিয়েছেন বিলাসী জীবন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘন ঘন ঘুরে বেড়ানো, নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাত্রপ্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দেওয়া—এসব ছিল রিয়াদের নতুন চেহারা। তবে মন্ত্রণালয় বলছে, এমন কোনো প্রতিনিধি তারা চেনে না। রিয়াদের এই ‘ছাত্রনেতা পরিচয়’ আসলে একটি ঢাল? এমন প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।

রিয়াদের চাচা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সে আগে খুবই গরিব ছিল। তার বাবা এখন আর রিকশা চালান না, তবে বড় ভাই এখনো চালান। হঠাৎ এত টাকার মালিক হলো কীভাবে, আমরা কিছুই জানি না।’ এলাকাবাসীরও দাবি, রিয়াদের দৃশ্যমান কোনো বৈধ আয়ের উৎস নেই, কিন্তু জীবনযাত্রা বদলে গেছে নাটকীয়ভাবে।


বিজ্ঞাপন


so

একসময় কাদের মির্জার ক্যাডার, পরে ছাত্রনেতা, এরপর ব্ল্যাকমেইল কাণ্ডে গ্রেফতার—রিয়াদের এই রূপান্তর কতটা বাস্তব, আর কতটা সাজানো? প্রশ্ন উঠেছে, কার ছত্রছায়ায় এত দ্রুত এই উত্থান? এবং এর পেছনের মূল উদ্দেশ্যই বা কী?

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর