রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ঝোপঝাড়ের আধিক্যে ইবিতে বিষধর সাপ আতঙ্ক

রাকিব রিফাত, ইবি
প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩৯ পিএম

শেয়ার করুন:

ঝোপঝাড়ের আধিক্যে ইবিতে বিষধর সাপ আতঙ্ক

বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি ও ঝোপঝাড়ের আধিক্য থাকায় বিষধর সাপের আতঙ্ক বেড়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কুষ্টিয়া ক্যাম্পাসে।

সম্প্রতি ইবির লালন শাহ হলে বিচ্ছিন্নভাবে তিনদিন বিষধর খৈয়া গোখরা সাপের দেখা মিলেছে। এছাড়াও শিক্ষকদের ডরমেটরি এলাকায় পদ্মগোখরা, ও বিভিন্ন স্থানে কালাচের চলাফেরার ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।


বিজ্ঞাপন


গত ২৩ জুলাই লালন শাহ হলের উত্তর ব্লকের নিচ তলায় ৩টা খৈরা গোখরার বাচ্চা দেখে মেরে ফেলেন আবাসিক ছাত্ররা। এর আগে ১৭ জুলাই ইবির ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের সদস্যরা দীর্ঘ ৪ ঘণ্টার অভিযানে দু’টি খৈয়া গোখরা সাপ উদ্ধার করে। এছাড়াও দক্ষিণ ব্লকে বড় গোখরা সাপ মেরে ফেলেন শিক্ষার্থীরা।

গত ৭ জুলাই ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ্ আলী চৌধুরী সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি পদ্ম গোখরা সাপের ভিডিও শেয়ার করেন। যা ডরমিটরি-২ এর প্রবেশ পথে দেখা গেছে বলে জানান তিনি।

thumbnail_1000116489

ক্যাম্পাসের ফুটবল মাঠ, ও শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর পাড়সহ অন্যান্য স্থানে প্রায়ই বিষধর কালাচের দেখা মিলে। রাতের আড্ডায় হঠাৎই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় ছাত্রদের।


বিজ্ঞাপন


ইবির ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি সাফওয়ান রহমান বলেন, লালন শাহ হল এরিয়ায় সাপের আনাগোনা বেশি হওয়ার কারণ হলো ওই হলের স্ট্রাকচালার ডিজাইন। হলের দুই বিল্ডিংয়ের মাঝে সরু ফাঁকা জায়গা ও গ্রাউন্ড ফ্লোরের নিচে ফাঁকা জায়গা রয়েছে যা সাপ বসবাসের জন্য আদর্শ স্থান। সেখানে রেসকিউ করা আমাদের জন্য সময়সাপেক্ষ হয়ে যায়। একবার রেসকিউ করতে দেখা যায় মেডিসিন ইউজ করেও ৪-৫ ঘণ্টা লেগে যায়। আর ক্যাম্পাসের অন্যান্য জায়গায় সাপের তৎপরতা কিছু সিজনাল কারণে ও ঝোপঝাড়ের বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে। ঝোপঝাড় নিয়মিত পরিষ্কার, শিক্ষার্থীদের সচেতনতা ও লালন শাহ হলের বিল্ডিংয়ের ফাঁকাগুলো পূরণ করলে বর্তমান ক্যাম্পাসের সাপ আতঙ্ক থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।

এদিকে ক্যাম্পাসে বিষধর সাপের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনো ভূমিকা লক্ষ্য না করায় এবং  ইবির মেডিকেল সেন্টারে অ্যান্টিভেনম রয়েছে কি না তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।

thumbnail_1000116488

ইবির মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম রয়েছে কি না, এ বিষয়ে চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া এটি দেওয়া সরকারিভাবে নিষেধ হওয়ায় এখানে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের সুযোগ নেই। সাপে কাটলেই অ্যান্টিভেনম দেওয়া যায় না, বিষাক্ত সাপের দংশন ছাড়া এটি দেওয়া হলে রোগী মারাও যেতে পারে। কার্ডিয়াক সাপোর্টসহ বিভিন্ন টেস্ট শেষে অ্যান্টিভেনম ব্যবহার করতে হয়।

তিনি আরও জানান, আগের মজুদ করা অ্যান্টিভেনমের মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন করে ১০টি অ্যান্টিভেনম আজ ইবি মেডিকেলে এসে পৌঁছেছে।

লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. গাজি আরিফুজ্জামান খান বলেন, সাপের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে হলে কার্বলিক এসিডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিল্ডিংয়ের মাঝে যে ফাঁকা জায়গা তা সিমেন্ট-বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। ভারী বৃষ্টি হলে ড্রেনের পানি গ্রাউন্ড ফ্লোরের নিচ দিয়ে নির্গমন হয়। কিন্তু আসলে কোন জায়গা দিয়ে নির্গমন হয়, তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। হলের এ বিষয়গুলো দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় ট্রেজারারসহ ইঞ্জিনিয়াররা এসেছিলেন। সাপের উপদ্রব থেকে বাঁচতে কাজ চলমান রয়েছে, সবার পরামর্শ আশা করছি।

আরও পড়ুন

খাতা মূল্যায়নে গাফিলতি: ৮ পরীক্ষককে আজীবন অব্যাহতি

এস্টেট অফিস প্রধান মোহা. আলাউদ্দিন বলেন, পরিষ্কারের কাজ দ্রুত করতে কিছু মেশিন বৃদ্ধি করে কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মৌসুমের কারণে সাপের উপদ্রব বেড়েছে। আগে হলগুলোতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণের পর ক্যাম্পাসের অন্যান্য স্থানে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইবি মেডিকেলে ১০-১২টি এন্টিভেনমের মজুদ রাখতে বলেছি। এ সংক্রান্ত দ্রুত রেসপন্সের জন্য একটা অ্যাম্বুলেন্সকেও বলা আছে। আশা করছি দ্রুত এ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর