উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতে বা অনেক কোম্পানিতে চাকরি কিংবা ভিসা ও ইমিগ্রেশনের জন্য প্রয়োজন হয় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট। মূলত এটি একটি সরকারি নথি যা প্রমাণ করে, কোনো ব্যক্তি কোনো অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত নয় এবং তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।
কিন্তু পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে পদে পদে হয়রারির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি মোটা অংকের ঘুষ দাবি করা হয়। পরে টাকা দিলে পাওয়া যায় এই সার্টিফিকেট।
বিজ্ঞাপন
এমন ঘটনার শিকার মাদারীপুরের বালিগ্রাম ইউনিয়নের বাসিন্দা শফিক মুন্সি (ছদ্মনাম)। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, পাসপোর্টে তার থানার ঠিকানা কালকিনি আর ভোটার আইডি কার্ডে থানা দেওয়া ডাসার।
অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করেন তিনি। কয়েক দফা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ও ডাসার থানায় গিয়েও পাননি সেবা। শেষমেষ চলে আসেন কালকিনি থানায়। সেখানে যোগাযোগ করেন কালকিনি থানার কম্পিউটার অপারেটর মো. সোহেল খানের সঙ্গে। গ্যারান্টি দেন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেওয়ার। এজন্য পুলিশের এই সদস্যকে দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা। টাকা না দিলে কোনো অবস্থাতেই মিলবে না এই সার্টিফিকেট। এমনকি অন্য কেউ শফিক মুন্সিকে সহযোগিতাও করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
শেষমেশ ৫ হাজার টাকা নগদ সোহেলের হাতে তুলে দিলে ১ জুলাই অনলাইনে আবেদন করিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেওয়ার প্রতিশ্রুত দেন থানার এই কম্পিউটার অপারেটর। গত ২০ জুলাই জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন এই ভুক্তভোগী।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মো. সোহেল খান বলেন, ‘আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি। আপনার কোনো কথা থাকলে থানার ওসি স্যারের সাথে থানায় এসে কথা বলেন।’
কালকিনির থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, ‘যে ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়েছে তাকে থানায় আসতে বলেন। আমি তার সঙ্গে কথা বলি, বিষয়টি কি হয়েছে জানার চেষ্টা করি। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পেতে কোনো টাকা লাগার কথা নয়।’
বিজ্ঞাপন
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। ওই পুলিশ সদস্য কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এএইচ

