রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিচারণে নীলফামারীর স্কুলের দেয়ালজুড়ে গ্রাফিতি

রাশেদ ইসলাম, নীলফামারী
প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫১ এএম

শেয়ার করুন:

জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিচারণে নীলফামারীর স্কুলের দেয়ালজুড়ে গ্রাফিতি

২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আজ পরিচিত ‘জুলাই বিপ্লব’ নামে। এটি শুধু একটি রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, বরং তরুণ প্রজন্মের বুকে লালিত স্বপ্ন ও ন্যায়ের দাবি থেকে উঠে আসা গণজাগরণ।

৫ আগস্ট ২০২৪-এ ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর, দেশের শিক্ষার্থীরা শুরু করেছে নতুন করে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা। আন্দোলনের এই জয় তরুণদের মাঝে এনে দিয়েছে প্রত্যয়ের এক নতুন দিগন্ত যেখানে তারা নিজেরাই গড়বে সমতার, ন্যায়ের এবং গণতন্ত্রের ভিত্তিতে একটি আধুনিক বাংলাদেশ।


বিজ্ঞাপন


Image_(2)

দেশ গড়ার লক্ষ্যে নতুন করে দেশকে সাজাতে নীলফামারীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেওয়ালে চিত্রায়িত হচ্ছে ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। জুলাই মাসজুড়ে জেলার স্কুল, কলেজ ও শিক্ষাকেন্দ্রগুলোতে শুরু হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী একটি উদ্যোগ। দেয়ালচিত্রের (গ্রাফিতি) মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে ২০২৪ সালের সাহসী গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি ও চেতনা।

আরও পড়ুন

জুলাই অভ্যুত্থান নতুন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য: নাহিদ ইসলাম

এই চিত্রায়ণের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে জানানো হচ্ছে কীভাবে একটি প্রজন্ম সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়িয়েছিল ফ্যাসিবাদ শাসকগোষ্ঠী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে। দেয়ালের প্রতিটি রেখা ও রঙে ফুটে উঠেছে ইতিহাস মিছিলের দৃশ্য, গর্জে ওঠা স্লোগান, পতাকা উত্তোলনের গর্বিত মুহূর্ত, শহীদদের মুখচ্ছবি এবং ‘জনতার গণঅভ্যুত্থান’ এর নানা স্মরণীয় সময়। এই শিল্প শুধু অতীতের সাক্ষী নয়, বরং আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস, যা মনে করিয়ে দেয় একসাথে দাঁড়ালে কোনো স্বৈরশক্তি চিরকাল টিকে থাকতে পারে না।


বিজ্ঞাপন


Image_(3)

নীলফামারী ছমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আবরার জাহিন বলেন, আমি ৫২ বা ৭১ দেখিনি কিন্তু ২৪-এর জুলাই অভ্যুত্থান দেখেছি। সেই চেতনা বা স্মৃতিকে ধরে রাখতে, সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে আমাদের এই স্কুলের দেওয়ালে জুলাই বিপ্লবের বিভিন্ন ধরনের স্মৃতি অঙ্কন করছি।

Image_(5)

নবম শ্রেণি পড়ুয়া লিখন মিয়া, তার বুকেও জ্বলছে ফ্যাসিবাদের আগুন। সেই কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা আমাদের দাদা-দাদিদের কাছে ১৯৭১ এর গল্প শুনেছি, কিন্তু ২০২৪ আমরা নিজের চোখে দেখেছি কীভাবে আমাদের ভাইয়েরা রক্ত দিয়েছে, তাদের তাজা প্রাণ এই রাস্তার মাঝে দিয়ে গেছে। আমরা তাদের স্মরণে এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যারা আসবে এবং আমাদের মাঝে অনুপ্রেরণা ধরে রাখার জন্য আমরা আমাদের ভাইদের কিছু স্মৃতিগুলো অঙ্কন করছি। কারণ এগুলো দেখে আমরা এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কিছু অনুপ্রেরণা পেতে পারে যে, আমাদের ভাইয়েরা একতা হয়ে কিছু সম্ভব করেছে, আমাদের মাধ্যমেও সম্ভব হবে।

Image_(4)

আরেক শিক্ষার্থী রওজা ইসলাম বলেন, আমাদের স্কুল থেকে গ্রাফিতি করার কথা বলা হলেও ২৪-এর জুলাই অভ্যুত্থানকে মনের ভেতর স্মরণ করে করে আমরা এই গ্রাফিতি করছি। জুলাই অভ্যুত্থান কিছু স্মৃতি আমরা দেওয়ালের মাঝে তুলে ধরছি। আমরা ছোট, ১৯৫২ কিংবা ১৯৭১ দেখিনি, তবে ২০২৪ এর জুলাই অভ্যুত্থান দেখেছি। আর এই জুলাইতে যারা শহীদ হয়েছেন, আমরা চিরজীবন তাদের স্মরণ করে যাব।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর