বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

যুবলীগ নেতাকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, ইউপি মেম্বার গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২২, ১১:৫৮ এএম

শেয়ার করুন:

যুবলীগ নেতাকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, ইউপি মেম্বার গ্রেফতার
গ্রেফতার ওমর ফারুক

ফেনীর সোনাগাজীতে হুমকি-ধামকির অভিযোগে করা জিডি তুলে না নেওয়ায় চরমজলিশপুর ইউনিয়ন যুবলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মনির আহম্মদকে (৩০) বাড়ির পাশ থেকে তুলে নিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ওমর ফারুককে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


বিজ্ঞাপন


মঙ্গলবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার মাওলানা ঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে সোমবার (২০ জুন) দুপুরে উপজেলার উত্তর চরমজলিশপুর এলাকা থেকে ইউপি সদস্য ওমর ফারুকের নেতৃত্বে ৭-৮ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলযোগে মনির আহম্মদকে চা দোকান থেকে তুলে কুঠিরহাট বাজারের ভাই ভাই সুপার মার্কেটে এনে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন ও কাঠ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় রাতে মনিরের বড় ভাই মো. ফরহাদ বাদী হয়ে ইউপি সদস্য ওমর ফারুক তার সহযোগী মো. ইমরান, মো. করিম, আনোয়ার হোসেন, মো. রুবেল, জাফর আহাম্মদ হাছানুল ইসলামসহ ৭ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ হোসেন যুবলীগ নেতাকে নির্যাতন ও এঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও আহতের পরিবার সূত্র জানায়, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চর মজলিশপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক ও সাবেক ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদসহ ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে অপর যুবলীগ নেতা মনির আহম্মদ এই ওমর ফারুকের পক্ষে কাজ না করে সাবেক ইউপি সদস্য হারুনের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেওয়ার পর থেকে উভয়ের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। নির্বাচনে ওমর ফারুক ইউপি সদস্য পদে নির্বাচিত হওয়ার পর মনিরকে এলাকা ছাড়াসহ দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় ফারুক। এ ঘটনায় মনির নিজের ও পরিবারে সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর থেকে মনির ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে থানা থেকে জিডি প্রত্যাহার করতে চাপ দেয় ফারুক। মনির জিডি প্রত্যাহার করতে রাজি না হওয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সোমবার দুপুরে মনির বাড়ির পাশের চা দোকানে আড্ডা দেওয়ার সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইউপি সদস্য ওমর ফারুক মোটরসাইকেল যোগে ৭-৮ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে দোকান থেকে মনিরকে তুলে কুঠিরহাট বাজারে নিয়ে আসে। সেখানে ভাই ভাই সুপার মার্কেটের ভেতরে প্রকাশ্যে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় যুবলীগ নেতা মনিরকে নির্যাতনের পর ফারুক মোটরসাইকেলের চেইন দিয়ে অন্যরা লাঠিসোটা ও কাঠ দিয়ে, পিটিয়ে তাকে গুরুতর জখম করে। একপর্যায়ে মনির অচেতন হয়ে মাটিতে লুটে পড়ে থাকে। খবর পেয়ে মনিরের ছোট ভাই শাহীন ঘটনাস্থলে আসলে তাকেও সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে আহত করে ফারুক ও তার সহযোগীরা অন্যত্র চলে যায়। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।


বিজ্ঞাপন


আহত মনিরের ভাই মো. ফরহাদ বলেন, ‘খবর পেয়ে সিএনজিযোগে তার মা ও মামা জাফর আহাম্মদকে নিয়ে কুঠিরহাট বাজারে আসলে সন্ত্রাসীরা তাদের ধাওয়া করে। এসময় সিএনজি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরেকটি গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এতে করে চালকসহ তারা চারজন আহত হন। আহতদের মধ্যে জাফর আহম্মদ আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্যরাও ফেনী জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।’

ফরহাদ বলেন, ‘চিকিৎসকরা বলেছেন নির্যাতনে মনিরের কানে পর্দা পেটে গেছে। বর্তমানে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’

ওসি মো. খালেদ হোসেন জানান, এ ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি ইউপি সদস্য ফারুককে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে ফেনী কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর