কক্সবাজারের টেকনাফে পৃথক অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব ও বিজিবি। সেইসঙ্গে অস্ত্র-গুলিসহ সন্ত্রাসী শফি ডাকাতের এক সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।
অপর এক অভিযানে পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করলেও কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বিজিবি।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে কক্সবাজারস্থ র্যাব ১৫ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ এক ডাকাতকে আটকের বিষয়টি জানান।
অভিযানে আটক মোহাম্মদ রুবেল (২৭) টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম লেদা এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কুখ্যাত সন্ত্রাসী শফি ডাকাত তার সশস্ত্র সহযোগীদের নিয়ে পশ্চিম লেদা এলাকায় ডাকাত খালেকের বাড়িতে অবস্থান করছে বলে জানা যায়। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় র্যাব-১৫ এর একটি চৌকস অভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে। দীর্ঘ ৩ ঘণ্টাব্যাপী অভিযানের শুরুতেই কুখ্যাত ডাকাত শফি ও তার দলবল র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ফায়ার করতে করতে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। র্যাবের টিম তাদেরকে ধাওয়া করে শফি ডাকাতের অন্যতম সহযোগী ডাকাত রুবেলকে লোডেড অস্ত্রসহ আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে ডাকাত রুবেলের দেখানো মতে তার সহযোগীদের ফেলে যাওয়া ১টি শটগান, ৩টি লোকাল গান, ১২টি তাজা এ্যামুনেশন, ৪২টি শটগান ও এলজির খালি কার্তুজ ও ২টি স্মার্ট ফোন উদ্ধার করা হয়।
র্যাব অধিনায়ক জানান, ডাকাত শফির সাথে উপস্থিত থাকা সন্ত্রাসীদের ১১ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। এরা হলেন- মো. আলম, মো. খালেক, সৈয়দ নূর, রাসেল ওরফে আব্বুইয়া, কামাল হোসেন, আনোয়ার সাদেক, আব্দুর রহমান, রবিউল হাসান ওরফে রবিয়া, আব্দুল আউয়াল ওরফে বুড়া পতিয়া, মোহাম্মদ আসিফ ও ইমাম হোসেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, চক্রটি টেকনাফের গহিন পাহাড় ও সমতল এলাকায় ডাকাতি, মুক্তিপণ আদায়, অপহরণ ও চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ডাকাত শফির বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অপহরণ মামলা ৫টি, অস্ত্র মামলা ৪টি, ডাকাতির প্রস্তুতি মামলা ২টি, মারামারি মামলা ৩টি, হত্যা মামলা ২টি ও সরকারি কর্তব্যে বাধাদানে ১টি মামলাসহ মোট ১৭টি মামলা রয়েছে। ডাকাত শফি ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
অপরদিকে টেকনাফের গহিন পাহাড়ের ডাকাত দলের আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণের অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে ৬৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবির সদস্যরা। তবে এ ঘটনায় তারা কাউকে আটক করতে পারেনি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা আনুমানিক ছয়টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী গহিন পাহাড়ে এ অভিযান চালানো হয়েছে। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন ৬৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার নেতৃত্বে ব্যাটালিয়ন সদরসহ হ্নীলা বিওপির বিশেষ টহল দল কর্তৃক হ্নীলার রঙ্গীখালী গহিন পাহাড়ের মধ্যে অভিযান চালানো হয়। বিজিবি টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল তাদের আস্তানা থেকে গহিন বনে পালিয়ে যায়। বিজিবি টহল দল তাদের আস্তানা ঘেরাও করে এবং তল্লাশি চালিয়ে ডাকাত দলের লুকিয়ে রাখা অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। এ গুলো হলো- বিদেশি রিভলবার-১টি, বিদেশি রিভলবারের গুলি-২১ রাউন্ড, একনলা গাদা বন্দুক (লং ব্যারেল)-১টি, বন্দুকের ছড়া গুলি ৩ রাউন্ড ও খালি খোসা-৫টি, এলজি গান-১টি, পিস্তল ওয়ান শুটার-১টি, রাইফেলের গুলি-১৪ রাউন্ড, ক্রিচ (লং বডি)-১টি, রামদা (লং বডি)-২টি।
অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, রঙ্গীখালীতে মাদক চোরাকারবারি, ডাকাত, অপহরণকারী, গুমকারী অপরাধীরা গহিন পাহাড়ে বনের ভেতর আস্তানা গড়ে লুকিয়ে থাকে। বিজিবি এ ধরনের সাহসিকতার অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে উদ্ধার করা মালিকবিহীন অস্ত্র ও গুলি টেকনাফ মডেল থানায় আলামত হিসেবে জমা করার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রতিনিধি/এসএস

