রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বরগুনায় অর্ধশতাধিক সড়ক বেহাল, জনদুর্ভোগে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা

অলিউল্লাহ্ ইমরান, বরগুনা
প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

বরগুনায় অর্ধশতাধিক সড়ক বেহাল, জনদুর্ভোগে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা

বরগুনার আমতলী পৌরসভা নামে রয়েছে প্রথম শ্রেণির, বাস্তবে যেন দুর্ভোগের শ্রেণিশূন্য শহর! পৌরসভার অর্ধশতাধিক সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় রীতিমতো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় পানি জমে চলাচল প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আর পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা! হাঁটু পানিতে নিমজ্জিত থাকে পুরো শহর।

thumbnail_Amtali_Picture-3_(Paurosava_Kanakando)-13_July


বিজ্ঞাপন


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে যাত্রা করা আমতলী ২০১২ সালে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। কিন্তু শহরের রাস্তা ও ড্রেনেজ অবকাঠামো রয়ে গেছে সেই পুরোনো রূপেই। ৩০ হাজার মানুষের এই শহরে নেই চলাচলের উপযুক্ত পরিবেশ। নয়টি ওয়ার্ডজুড়ে দেড় শতাধিক সড়কের মধ্যে অর্ধশতাধিকই এখন অচলাবস্থায়।

চার নম্বর ওয়ার্ডের অমল পালের দোকান থেকে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের ফোরকানের দোকান পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কের পিচ উঠে গর্তে পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা নজির মৃধার বাসার সামনের সড়ক, আখরাবাড়ি, খোন্তাকাটা, হাজীবাড়ি, লোছা বাজার, গরুর হাট, কলেজ পেছনের এলাকা — সর্বত্র একই করুণ চিত্র।

বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তায় পানি আর গর্ত ছাড়া কিছু নেই, রিকশাও যেতে চায় না।

স্কুল শিক্ষার্থী তানজিলা জানায়, আমরা প্রতিদিন স্কুলে পায়ে হেঁটে যাই, বর্ষায় রাস্তায় পানি জমে থাকে, হাঁটাও যায় না, ভিজেও যাই।


বিজ্ঞাপন


স্থানীয় বাসিন্দা রেখা বেগম বলেন, এখন স্বাভাবিকভাবে চলাফেরাই দুঃসাধ্য হয়ে গেছে।

thumbnail_Amtali_Picture-2_(Paurosava_Kanakando)-13_July

নিজের খরচে সাঁকো বানিয়ে চলছে জনজীবন। পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের খাস পুকুর এলাকায় সড়ক ১০ বছর আগেই বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিবছর বর্ষায় ১০–১২টি পরিবার পানিবন্দি থাকে। বাধ্য হয়ে বাসিন্দারা নিজের খরচে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে যাতায়াত করছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, তিন বছর ধরে পৌরসভায় রাস্তা মেরামতের জন্য বলছি, কেউ কানে নেয় না।

সড়কের পাশে বসবাসরত শতাধিক পরিবার প্রতিবছর জলাবদ্ধতায় হাবুডুবু খায়, কিন্তু সুরাহার কোনো উদ্যোগ নেই।

আরও পড়ুন

টানা বৃষ্টিতে ভবদহে ফের জলাবদ্ধতা 

এ বিষয়ে আমতলী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মজিবুল হায়দার জানান, সময়ে সময়ে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় সড়কগুলো সংস্কার করা সম্ভব হয়নি।

পৌরসভার প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, ভাঙা সড়কের তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে, বরাদ্দ পেলে সংস্কার কাজ শুরু হবে।

যেখানে সিটি করপোরেশনসমূহ স্মার্ট নগরীর স্বপ্ন দেখাচ্ছে, সেখানে এক ‘প্রথম শ্রেণির’ পৌরসভায় এই করুণ অবস্থা প্রমাণ করে, উন্নয়ন শুধু শ্রেণির তকমায় নয়, তা নাগরিক সুবিধায় প্রতিফলিত হয়।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর