ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সাথে সাথে দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন৷ ইতোমধ্যেই মৎস্য, প্রাণী সম্পদ, সড়ক ও কৃষি বিভাগে অন্তত শত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তথ্য ওঠে এসেছে। প্রাথমিকভাবে তৈরি করা ক্ষয়ক্ষতির তথ্যে শুধুমাত্র ১২৬টি গ্রামীণ সড়কের ৩০০ কিলোমিটারে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এসব সড়ক জরুরি মেরামত না হলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে পারে।

বিজ্ঞাপন
জানা যায়, ফেনীতে ৭ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণ এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের চাপে বন্যা রক্ষা বাঁধের ৩৬টি স্থানে ভাঙ্গনে ফেনীতে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। ১০ জুলাই থেকে বৃষ্টিপাত কমতে থাকায় ১১ জুলাই থেকে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করে। বন্যার পানি নেমে আসার পর রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন খামারে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।

ইতোমধ্যে সরকারি বিভিন্ন দফতর প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। ওই প্রতিবেদনে শুধুমাত্র ১২৬টি গ্রামীণ সড়কের ৩০০ মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অন্তত ৯০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ রাস্তার উপর দিয়ে পানি গড়িয়ে যাওয়ায় কোন কোন এলাকায় রাস্তার ২০ থেকে ৫০ ফুট বিলীন হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও রাস্তায় বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কগুলো জরুরি মেরামত করা না গ্রামীণ জনপদে পণ্য সরবরাহ চেইন বিঘ্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা৷

বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ জানায়, সম্প্রতি মুহুরি, কহুয়া ও সিলোনীয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে বাঁধভাঙা পানি গ্রামীণ সড়কের উপর দিয়ে গড়িয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করতে থাকে। বন্যার সময় কিছু কিছু সড়কের ৫ থেকে ৬ ফুট উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য ও প্রতিবেদনে ফেনীর ৫ উপজেলায় ৩০০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য উঠে এসেছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ফুলগাজী উপজেলার ৬৯ টি সড়কের ৯৫ কিলোমিটার, পরশুরামের ১৮টি সড়কের ৪৯ কিলোমিটার, ছাগলনাইয়ার ১৭টি সড়কের ১২৬ কিলোমিটার, সোনাগাজীর ১৩টি সড়কের ১০ কিলোমিটার ও ফেনী সদর উপজেলার ৯টি সড়কের ২০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে।

এসব সড়ক মেরামত করতে অন্তত ৯০ কোটি টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগ ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহমুদ আল ফারুক। সড়কগুলো জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করতে না পারলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।

দফেনী জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বন্যা এখনো শেষ হয়নি। কয়েকটি ডিপার্টমেন্ট প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির একটি বিবরণী আমাদেরকে দিয়েছে। এটিকে আমরা চূড়ান্ত ভাবছি না। এখনও জেলায় অনেক এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির তথ্য হাতে পাবো। দুর্গত এলাকায় পুনর্বাসনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/ এজে

