সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বরগুনায় ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর যুবদল নেতার হামলা-ককটেল বিস্ফোরণ, আটক ২

জেলা প্রতিনিধি, বরগুনা
প্রকাশিত: ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

বরগুনায় ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর যুবদল নেতার হামলা-ককটেল বিস্ফোরণ, আটক ২

ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে, লাঠি ও ধারালো রামদা নিয়ে আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধার ওপর হামলা করা হয়েছে। এসময় চেয়ারম্যানকে বাঁচাতে গিয়ে রামদার কোপে আরেক ইউপি সদস্যসহ ২জন আহত হয়েছেন।

রোববার (১৩ জুলাই) ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ও প্যানেল চেয়ারম্যান-২ ফিরোজখান তাপসসহ দু’জনকে আটক করেছে নৌবাহিনী।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_IMG-20250713-WA0029

জানা গেছে, ১৯ জুন আমতলী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধার কাছ থেকে ইউএনও অফিস গেট সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে বসে আমতলী সদর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ও প্যানেল চেয়ারম্যান-২ তাপস খান ফিরোজ তার অনুসারী বাহিনী নিয়ে দোকান ঘেরাও করে। গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে লিখিতভাবে ১০ জুলাই পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব বুঝে নেন। তার দায়িত্ব পালনের নির্ধারিত তারিখ শেষ হলে রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টার সময় ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা তার দায়িত্ব পালনের জন্য খুরিয়ার খেয়াঘাটে অবস্থিত ইউপি কার্যালয়ে যান। কার্যালয়ে তখন সেবা নেওয়ার জন্য ইউনিয়নের প্রায় দেড় শতাধিক নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১১টার সময় যুবদল নেতা ও ইউপি সদস্য ফিরোজ খান তাপস আকস্মিক ৩০-৪০ জনের একটি বাহিনী নিয়ে হাজির হন। হকিস্টিক ধারালো দা, লাঠি নিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। কমপ্লেক্স চত্বরে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। চেয়ারম্যানের কক্ষে ঢুকে এলোপাথাড়ি  হামলা শুরু করেন।

Messenger_creation_258B077D-3FEA-45A6-AAFC-5BDFCA24E3C3

এসময় ইউপি সদস্য সোহেল খান (৪০) এবং জসিম মৃধা (৫০) চেয়ারম্যানকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসেন। তাদের দু'জনকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে গুরুতর জখম করে তাপসের লোকজন। খবর পেয়ে আমতলী থানা পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ফিরোজ খান তাপস ও রাসেল আকন নামে ২জনকে আটক করে ইউপি কার্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে তাপসের স্ত্রী খাদিজা বেগমের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন অনুসারী নিয়ে পুলিশ ও নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে নানা রকম স্লোগান দিয়ে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। তবে কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্য মোতায়েনের পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_Messenger_creation_9FD3A720-6E23-4CA7-99BC-C306D365F069

আহত ইউপি সদস্য সোহেল খানকে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জসিম মৃধাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সেবা নিতে আসা বিউটি নামের এক গৃহবধূ বলেন, 'বাবা দেহি ব্যামালা লোক দাও রাঠি লইয়া বোমা ফাটাইয়া মাইর ধইর শুরু করে। মোরা এইয়া দেইখ্যা দুওে চইল্যা যাই। মো. বশির খান নামে আরেকজন বলেন, স্যার পুলিশ নৌবাহিনী না থাকলে আইজ চেয়ারম্যানেরেও মাইর‌্যা হালাইতে। ব্যামালা গন্ডগোল অইছে।'

thumbnail_IMG-20250713-WA0030

আহত ইউপি সদস্য সোহেল খান বলেন, প্যানেল চেয়ারম্যান ও যুবদল নেতা ফিরোজ খান তাপস ইউপি কার্যালয়ে ঢুকে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। তিনি ককটেল ফাটিয়ে এবং রামদা ও হকিস্টিক নিয়ে চেয়ারম্যানের ওপর হামলা করতে যান। আমি এবং চেয়ারম্যানের ভাই জসিম মৃধা রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে আমাকে এবং জসিম মৃধাকে রামদা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন।

thumbnail_Messenger_creation_3448DDCB-ED1C-4A52-A112-AAC815F9BA4A

অভিযুক্ত ফিরোজ খান তাপস তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের লোক তাই আমার বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগ করে দলীয়ভাবে হেয় করার জন্য এই ঘটনা সাজিয়েছে।

আমতলী সদর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা বলেন, ইউনিয়ন যুবদল নেতা ও প্যানেল চেয়ারম্যান ফিরোজ খান তাপস ১৯ জুন একটি চায়ের দোকানে বসে নিজে দরখাস্ত লিখে এনে পুলিশের গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক দায়িত্ব বুঝে নেন। আজ আমি ইউপি কার্যালয়ে গেলে সে আমাকে শেষ করে দেওয়ার জন্য হামলা করে। ভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে যাই। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই।

Messenger_creation_60528E26-B80F-47B0-851E-5180C082AC50

ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থললে আমতলীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসান, আমতলী-তালতলী সার্কেলের এএসপি তরিকুল ইসলাম মাসুদ ও নৌবাহিনীর তালতলী কন্টিজেন্টের কমান্ডার মো. আরাফাত ও আমতলী থানার ওসি তদন্ত মো. আমির হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

আমতলী থানার ওসি তদন্ত মো. আমির হোসেন বলেন, নৌবাহিনী সদস্যরা যুবদল নেতা ও ইউপি সদস্য ফিরোজ খান তাপসসহ দু'জনকে আটক করেছে। এখনও তাদেরকে থানায় সোপর্দ করেনি। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর