সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

গুনে গুনে ঘুষের টাকা নিচ্ছেন জনস্বাস্থ্য ক্যাশিয়ার উজ্জ্বল বড়ুয়া

জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম

শেয়ার করুন:

গুণে গুণে ঘুষের টাকা নিচ্ছেন জনস্বাস্থ্য ক্যাশিয়ার উজ্জ্বল বড়ুয়া

গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে গুনে গুনে ঘুষের টাকা গ্রহণ করতে দেখা গেছে চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের ক্যাশিয়ার উজ্জ্বল বড়ুয়াকে। অধিদফতরের পুরাতন ভবনে নিজের টেবিলে বসে এভাবে টাকা নিতে দেখা যায় তাকে।

ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি টাকা দেওয়ার সময় বলেন, ‘এক্সেন স্যার বলেছেন আমার নাম করে কেউ এক টাকাও চাইলে দেবেন না’। জবাবে উজ্জ্বল বড়ুয়া বলেন, ‘আবার গিয়ে বলেন দাদা এই কথা বলছে, দেখবেন তখন না বলবে না’। এরপরই উক্ত ব্যক্তি টাকা বের করে তার হাতে দিলে তিনি তা গুণে নিতে শুরু করেন। তখন আরও একজন বলেন, ‘টাকা তো সব আপনাদের অফিসেই দিয়ে দিলাম। আমাদের কিছু আছে?’


বিজ্ঞাপন


1000038099

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উজ্জ্বল বড়ুয়া ২০১৭ সালে চাকরিতে যোগদান করেন। শুরুর দিকে তার আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকলেও বর্তমানে তিনি বিলাসবহুল দ্বিতল ভবনের মালিক। এছাড়া তার নামে ও বেনামে রয়েছে তিনটি ট্রাক, একটি সিএনজি, দু’টি দোকানসহ বিপুল সম্পদ। দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ ও সরকারি চাকরিজীবী হয়েও দলীয় পদধারী থাকা সত্ত্বেও এখনও বহাল তবিয়তে ক্যাশিয়ার পদে কর্মরত আছেন তিনি।

দফতরের একাধিক সূত্র জানায়, এর আগে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হন। নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে শুরু করে অধস্তন কর্মচারীরাও ছিলেন তার ভয়ে তটস্থ। কথায় কথায় তিনি সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল, আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও অন্যান্য নেতাদের নাম নিয়ে ভয় দেখাতেন।

আরও পড়ুন

চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবদল নেতা বহিষ্কার

২০১৯ সালে কক্সবাজারের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান প্রকৌশলীর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন উজ্জ্বল বড়ুয়ার বিরুদ্ধে। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘উজ্জ্বল বড়ুয়া যোগদানের পর থেকেই দুর্নীতি, অনিয়ম ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে দফতরের পরিবেশ নষ্ট করেছেন। তিনি কক্সবাজার জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের জেলা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আওয়ামী লীগের পদ-পদবি ব্যবহার করে দফতরের কাজে হস্তক্ষেপ করতেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, তিনি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে নিজের পরিচিত লোক দিয়ে মালামাল সরবরাহ করতেন। এমনকি ইট, বালি, সিমেন্টের দাম অতিরিক্ত দেখিয়ে ল্যাব টেস্টের খরচও বাড়িয়ে নিতেন। ঠিকাদারদের নানা উপায়ে জিম্মি করে মোটা অঙ্কের ঘুষ আদায় করতেন। তার পদোন্নতিতে সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন সুপারিশ করেছিলেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত উজ্জ্বল বড়ুয়া বলেন, ‘ভিডিওতে যাদের দেখা যাচ্ছে, তাদের কোনো অভিযোগ আছে? আমি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে ইচ্ছুক নই। আমাদের মিডিয়ায় কথা বলা নিষেধ আছে’।

চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মিডিয়ায় বক্তব্য দিতে হলে আমাদের অনুমতি নিতে হয়। এভাবে কথা বলতে পারব না।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর