মহাসড়ক যেন এক মরণ ফাঁদ, দুর্ভোগের প্রতিচ্ছবি। ফরিদপুর-ভাঙা ৩২ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কটি ৩০ মিনিটের পথ, যা পাড়ি দিতে এখন সময় লাগে প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা। আগে থেকেই সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও পদ্মাসেতু চালুর পর সেই গুরুত্ব বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এই সড়কটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট।
ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাগুরা, ঝিনাইদহ, যশোর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুরসহ একাধিক জেলার যাতায়াতের প্রধান সড়ক এটি। ব্যস্ততম এই সড়কটি বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে চরম অব্যবস্থাপনায়। পুরো সড়কজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য গর্ত। কোথাও বড়, কোথাও ছোট, আবার কোথাও গভীর। আর বর্ষার সময় সেই গর্তেই জমে থাকে বৃষ্টির পানি। অনেক স্থানে রাস্তা চেনারই উপায় নেই। বোঝা যায় না কোথায় গর্ত আর কোথায় সমতল। এসব গর্ত এখন যাত্রী ও চালকদের কাছে যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
![]()
৩২ কিলোমিটার সড়ক যেতে একই গাড়ির চাকা দিনে তিন থেকে চারবার পর্যন্ত পাংচার হওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। অসুস্থ রোগী নিয়ে চলা অ্যাম্বুলেন্সের চালকরা এই রাস্তায় পড়ে যায় চরম বিপাকে। ঝাঁকুনিতে অনেক রোগীর অবস্থা আরও গুরুতর হয়ে পড়ে। সময় মতো হাসপাতালে পৌঁছাতে না পারায় অনেক সময় ঘটে প্রাণহানি। তখন তাদের কাছে এই সড়ক হয়ে ওঠে দুঃসহ অভিজ্ঞতার এক জ্যান্ত যন্ত্রণা।
সড়কে জমে থাকা গর্তের পানি সরিয়ে ইট-বালু দিয়ে ভরাট করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তারা বৃষ্টির ভেতর গর্তে সামান্য ইট-বালু ফেলে দায় মুক্তি নেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বিজ্ঞাপন
একাধিক বাস-ট্রাক চালক জানান, প্রতিনিয়ত জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে এই সড়কে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। কাল বিলম্ব না করে এখনই এটিকে ৪ লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু করা দরকার।
![]()
যাত্রী ও চালকসহ এই সড়কে চলাচলকারীদের চরম দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার বলেন, পুরো সড়কজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য গর্ত। এ সড়কে যেন যান চলাচল সচল রাখা যায় নেই চিন্তা থেকে জরুরি মেরামতের কাজ চলছে। আর তিন থেকে চার দিনের মধ্যে তা শেষ হবে। এছাড়া সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যেই ৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও নিয়োগ পেয়েছে। তাদের সাথে একটি চুক্তিও হয়েছে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমের কারণে কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আবহাওয়া অনুকূলে আসলেই কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার আরও বলেন, জরুরি সংস্কার বা পূর্ণাঙ্গ সংস্কার যাই বলি এগুলো এই আসলে এখন এই সড়কের জন্য যথেষ্ট নয়। এটি চার লেনে রুপান্তর এখন সময়ের দাবি। এ বিষয়ে বতর্মান জেলা প্রশাসন অত্যন্ত আন্তরিক। চার লেন করতে হলে সড়কের দু’পাশে ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। শিগগিরই সে কাজ শুরু হবে বলে জানতে পেরেছি। ভূমি অধিগ্রহণ শেষ হলেই পরবর্তী কাজ শুরু হবে।
প্রতিনিধি/এসএস

