রাজধানীর পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে মাথা থেঁতলে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে নীলফামারীর ডোমারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ জনগণ। নব জাগরণ ডোমার এবং হৃদয়ে ডোমার ব্যানারে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (১২ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে ডোমার বাজার রেলগেট সংলগ্ন প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়।
বিজ্ঞাপন
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে কর্মসূচিতে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা সোহাগ হত্যার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত করে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আবু সাঈদ বলেন, একজন মানুষ কতটা নিকৃষ্ট হলে একজন নিরীহ মানুষকে চাঁদার জন্য এভাবে পাথর মেরে হত্যা করতে পারে। ২৪-এর গণ-আন্দোলনে দলমত নির্বিশেষে সবাই রাস্তায় নেমেছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। এই ২৫-এ হয়ত আমাদের আবারও রাস্তায় নামতে হতে পারে। তবে সেই নামাটা হবে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। নতুন বাংলাদেশ এখনো ১০ মাস অতিক্রম করেনি, এর মধ্যে ১৫০-এর বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্য দিয়ে বুঝতে পেরেছি, যারা ক্ষমতায় না গিয়েই নিজেদের দম্ভ ও লোভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তাদের হাতে আগামীর বাংলাদেশ কখনও নিরাপদ থাকতে পারে না। ২০২৫ সালেও অবৈধ চাঁদার জন্য একজন মানুষকে পাথর মেরে হত্যা করা এর চেয়ে বড় নিন্দনীয় কিছু হতে পারে না। কর্মই মানুষের পরিচয়। সবচেয়ে বড় কথা, দলীয় পরিচয় ভুলে মানুষকে মানুষ হিসেবে গ্রহণ করতে শিখতে হবে। অন্যথায় ৩৬ জুলাই যেভাবে স্বৈরাচারকে তাদের মামাবাড়ি দিল্লিতে পাঠানো হয়েছিল, তেমনি নতুন করে তাদের ঠিকানা কোথায় হবে সেটি জানেনা কেউ। অন্যায়ভাবে একজন মানুষকে হত্যা করা পুরো জাতিকে হত্যার শামিল। তাদের হাতে কোনোদিন বাংলাদেশ নিরাপদ হতে পারে না।
অন্য বক্তা কামরুল ইসলাম আরেফী বলেন, একজন মানুষের কী পরিমাণ সাহস হলে দিনের আলোয় প্রকাশ্যে একজন নিরীহ মানুষকে চাঁদার জন্য হত্যা করতে পারে! আমরা আইয়্যামে জাহেলিয়াতের কথা শুনেছি—সেই যুগে মানুষকে পাথর মেরে হত্যা করা হতো। আজ এই দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে, সেই বর্বর যুগ ফিরে এসেছে এই সোনার বাংলায়। দলমত নির্বিশেষে হত্যাকারী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে।
ছাত্র প্রতিনিধি অর্ণব আল আলিফের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সোহেল রানা, মুফতি মহিউদ্দিন জুলফিকার, ইসলামি বক্তা আবু সাঈদ, কামরুল ইসলাম আরেফী ও ছাত্র প্রতিনিধি মাহির মোহাম্মদ মিলন। ও স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
বিজ্ঞাপন
বক্তারা বলেন, নিরাপত্তার অভাবে সাধারণ মানুষ চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। আমরা চাই, এই হত্যার সঠিক ও দ্রুত বিচার হোক এবং ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে প্রশাসন দাঁড়াক।
প্রতিনিধি/ এজে

