রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত নোয়াখালী, আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী 
প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৩ এএম

শেয়ার করুন:

টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত নোয়াখালী, আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ

নোয়াখালীতে টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা ও বন্যা। জেলার সদর, সুবর্ণচর, হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ, বেগমগঞ্জসহ প্রায় সব উপজেলায় নিচু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবন।

গ্রামের অনেক এলাকার সঙ্গে শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নোয়াখালীর প্রধান নদী মেঘনা ও তার শাখা নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


বিভিন্ন স্থানে বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। নিচু এলাকার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে। জেলা সদরের মাইজদী, সোনাপুরসহ শহরেরও অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে গ্রামের মানুষের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি তৈরি হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি খাত। অনেক রোপা আমন ধান ও সবজির জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকেরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অনেক পুকুর ও মাছের ঘেরের মাছ ভেসে গেছে।

পানিতে ডুবে গেছে গ্রামের বহু রাস্তা। যোগাযোগ ব্যবস্থা একপ্রকার ভেঙে পড়েছে। বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। স্যানিটেশন ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে।

জেলায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনেক পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। সদর, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ২১৬টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।


বিজ্ঞাপন


জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে, জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৬৩ হাজার ৮৬০ জন মানুষ।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে একাধিক আশ্রয়কেন্দ্র। শুরু হয়েছে পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার কার্যক্রম।

ত্রাণ বিতরণও শুরু হয়েছে। শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন মেডিকেল টিমও গঠন করেছে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে এসব টিম।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় আরও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা বলছেন, দ্রুত ও পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। তারা জানিয়েছেন, প্রতি বছর নোয়াখালীতে এমন জলাবদ্ধতা ও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর স্থায়ী সমাধানের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।

প্রতিনিধি/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর