রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সহযোগিতার নামে প্রতারণা, ধর্ষণের শিকার কিশোরী

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:০৪ এএম

শেয়ার করুন:

সহযোগিতার নামে প্রতারণা, ধর্ষণসহ মুক্তিপণের ফাঁদে কিশোরী

মায়ের সঙ্গে সিলেট থেকে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন ১৭ বছরের এক কিশোরী। তারা সিলেট থেকে ভানুগাছ স্টেশন পর্যন্ত আসনবিহীন টিকিট কাটেন। তবে ট্রেনের বগিতে যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়ে বিভ্রান্ত হয়ে কিশোরী ভুল করে নেমে পড়ে কুলাউড়া জংশন স্টেশনে। মা তখনও ছিলেন ট্রেনে। বিভ্রান্ত কিশোরী মাকে খুঁজে না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে ট্রেন ছাড়লে সে স্টেশনেই থেকে যায় এবং বাড়ি ফেরার জন্য পরবর্তী ট্রেনের অপেক্ষা করতে থাকে।

এ সময় আক্তার আলী (২৮) নামের এক গাড়িচালকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। প্রথমে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে কিশোরীকে নিজের সঙ্গে নিয়ে যান আক্তার। ওই ব্যক্তি তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। পরে ভুক্তভোগীকে জিম্মি করে তার স্বজনদের কাছে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণও দাবি করে।


বিজ্ঞাপন


এ ঘটনায় কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। পরে আক্তার আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আক্তারের বাড়ি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কায়স্থ গ্রামে। তিনি পেশায় প্রাইভেটকারের চালক। কুলাউড়া রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন সিলেটে ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করতেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার ও কিশোরীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিশোরীর পরিবার হতদরিদ্র। সিলেটের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক স্বজনকে দেখে গত ৩০ জুন মায়ের সঙ্গে সে বাড়িতে ফিরছিল। ট্রেনে ভিড়ের মধ্যে মাকে হারিয়ে ফেলে। ভুলে কুলাউড়া রেলস্টেশনে নামার পর গাড়িচালক আক্তার আলী তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। এতে কিশোরী রাজি হয়ে গাড়িতে ওঠেন। আক্তার তাকে সিলেটের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখান এবং একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন।

এজাহারে বলা হয়, নিখোঁজের সময় কিশোরীর কাছে একটি মুঠোফোন ছিল। সিলেটে যাওয়ার পর আক্তার তার মুঠোফোনটি কেড়ে নেন। ওই মুঠোফোনে থাকা কিশোরীর এক আত্মীয়ের সঙ্গে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমোতে কথা বলেন। তখন তিনি নিজেকে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে জানান, কিশোরী তার হেফাজতে আছে। তাকে ফেরত পেতে বিকাশে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় গত সোমবার রাতে নগরের কদমতলী এলাকা থেকে কিশোরীকে উদ্ধারের পাশাপাশি আক্তার আলীকে গ্রেফতার করা হয়।

 

কুলাউড়া রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দিপক দেওয়ান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আক্তার আলী অপরাধ স্বীকার করেছেন। তাকে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কিশোরীকে মৌলভীবাজারের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর