ময়মনসিংহের তারাকান্দার দাদরা গ্রামে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে নারীর অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় নিহতের পরিচয় মিলেছে। তার নাম সুফিয়া খাতুন (৩৪)।
গত বৃহস্পতিবার এই নারীর মরদেহ অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করা হয়। এরপর এটা নিয়ে কাজ করে থানা পুলিশ, র্যাব ও সিআইডি। পাশাপাশি পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার একটি টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য ছায়া তদন্ত শুরু করে।
বিজ্ঞাপন
অবশেষে ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছে পিবিআই। পাশাপাশি হত্যাকারী সন্দেহে রোহান মিয়া নামে (২৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে সংস্থাটি।
নিহত সুফিয়া খাতুন ফুলপুরের পাতিলগাঁও গ্রামের কেরামত আলীর মেয়ে। গত ২৯ তারিখ ছাগল বিক্রি করতে স্থানীয় তারাকান্দা বাজারে যান তিনি। সন্ধ্যা থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে এ ঘটনায় তার ছোট ভাই ইলিয়াস তারাকান্দা থানায় একটি জিডি করেন।
রোববার (৬ জুন) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার জনাব মো. রকিবুল আক্তার।
তিনি জানান, শনিবার রাতে ফুলপুরের বেপারী পাড়া এলাকা থেকে রোহান মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। রোহান দাদরা গ্রামের আলাল মিয়ার ছেলে। পরে তার দেখানো তথ্যমতে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
প্রেম জমিয়ে শারীরিক সম্পর্ক, কথা কাটাকাটির জেরে হত্যা
পিবিআই এসপি রাকিব জানান, গ্রেফতারকৃত রোহান তার একজন বন্ধুর কাছ থেকে সুফিয়ার মোবাইল নম্বরটি নিয়ে প্রেমের অভিনয় করেন। গত ২৯ জুন সুফিয়া তারাকান্দা বাজারে ছাগল বিক্রি করতে গেলে রোহান তার সাথে দেখা করেন। সুফিয়াকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করেন এবং রাত ৯ টার দিকে রোহানের এলাকার গেসু মিয়ার পরিত্যক্ত নির্জন বাড়িতে তাকে নিয়ে যান। সেখানে রোহান সুফিয়ার সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান।
শারীরিক সম্পর্ক শেষে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয় এবং তা ঝগড়ায় রূপ নেয়। সুফিয়া উত্তেজিত হয়ে তাকে চড় মারলে রোহান ক্ষিপ্ত হয়ে সুফিয়ার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি গোপন করতে মৃতদেহটি পাশের সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে দেন তিনি। পরে রোহান সুফিয়ার কাছে থেকে চার হাজার টাকা ও তার ব্যবহৃত ফোনটি নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর সে গা ঢাকা দেয়।
তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সালাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, রোহান এর আগেও এমন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তার নামে হত্যা মামলা রয়েছে। যা তাকে গ্রেফতারের পর জানা গেছে।
তিনি আরও জানান, রোহান আদালতে তার জবানবন্দি দিয়েছেন। তার সঙ্গে আরও কারও সম্পৃক্ততা ছিল কি না, এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে।
এমআইকে/এএইচ