ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার পর দেখা দিল বিস্ময়কর ও অবিশ্বাস্য এক পরিস্থিতি। পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল দুই চাচাতো ভাইয়ের—সিয়াম হোসেন (৬) ও সোহান আলী (৭)।
সকালে চিকিৎসক তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর গোসল করিয়ে কাফনে মোড়ানো হয়। কিন্তু ঘটনার মোড় ঘুরে যায় প্রায় ১০ ঘণ্টা পর, যখন স্বজনরা দাবি করেন—'ওরা নড়ে উঠেছে!'
বিজ্ঞাপন
এই খবরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে কাফনের কাপড় পরা অবস্থায় দুই শিশুকে আবার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনরা। তাদের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় আড়াই শতাধিক মানুষ। চারদিক জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য।
শুক্রবার (৪ জুলাই) রাত ৮টার দিকে বিষয়টি ঢাকা মেইলকে নিশ্চিত করেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. আহাদুজ্জামান।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, সকালে দুই শিশুকে মৃত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু প্রায় ১০ ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় হঠাৎ তারা আবার আসে কাফন পরানো অবস্থায়। পরিবারসহ শতশত মানুষ জোর দাবি করে যে, তারা নাকি নড়েচড়ে উঠেছে! তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমরা নিশ্চিত হই—তারা মৃতই ছিল। এটি স্বজনদের এক ধরনের মানসিক বিভ্রম বা হ্যালোসিনেশন হতে পারে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে ছোট লাহিড়ী গ্রামে বাড়ির পাশে খেলার সময় অসাবধানতার জন্য পুকুরে পড়ে যায় সিয়াম। চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করতে যায় তার চাচাতো ভাই সোহান। কিন্তু দু’জনেই পানিতে তলিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
বাবারা দু'জনই ছিলেন ঢাকায় কর্মস্থলে। তাই সন্তানদের শেষবার দেখতে পৌঁছাতে সময় লেগে যায়। তারই মাঝে তৈরি হয় আবেগঘন ও বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি।
এমন হৃদয়বিদারক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না—একই পরিবারের দু’টি ছোট প্রাণ এভাবে নিভে যাবে। আবার কাফনের কাপড়ে মোড়ানো দেহে ‘নড়াচড়ার’ বিভ্রান্তি অনেকের মনে তৈরি করেছে এক ধরনের রহস্য আর অন্ধ বিশ্বাস।
প্রতিনিধি/এসএস