প্রেমঘটিত কারণে হলের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী। তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের চারতলার উপর থেকে 'আল্লাহু আকবার' বলে লাফিয়ে নিচে পড়েন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। তার দুই পা ভেঙে গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
বিজ্ঞাপন
ওই শিক্ষার্থীর নাম সাদ আহমেদ। বাসা সিরাজগঞ্জ। তিনি পবিত্র কুরআনের একজন হাফেজ। তার বাবা আরেকটি বিয়ে করায় তিনি তার বাবার পরিচয় কাউকে দিতেন না। আত্মহত্যার চেষ্টার আগে তিনি ফেসবুকে কয়েকটি পোস্ট করেন। সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ভালোবাসি লিসা'।
তার প্রেমিকা লিসাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, লিসা তুমি জানতা তোমাকে আমি কতটা ভালোবাসি তবুও কেন এমন করলে? সব জায়গায় সেইম ইফোর্ট সেইম ডায়ালগ কীভাবে পারো লিসা? মানুষ এতটা সাইকো কীভাবে হয়? তোমাকে তো বলেই ছিলাম আমার সঙ্গে চিট করলে কিন্তু আমার বন্ধু ফিরোজের মতো আমাকেও মরা ছাড়া উপায় থাকবে না। এত করে বুঝাইলাম তাও বুঝলে না।
আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, সরি আম্মু পারলে মাফ করে দিও। তুমি আমার আম্মু ছিলা, তুমি আমার আব্বু ছিলা।
আরো একটি পোস্টে লিখেছেন, সময়ের অভাব আর কষ্টের কারণে সব ভালোভাবে বলতে পারলাম না। আর হ্যাঁ আমার খুব ইচ্ছা আমার কবর হবে মসজিদের পাশে। যেখান থেকে আমি ইমামদের তেলাওয়াত শুনতে পারবো। আর প্লিজ কেউ একটু আম্মুকে দেইখেন ফাইনানসিয়ালি।
বিজ্ঞাপন
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি মাত্রই ছাঁদে উঠেছিলাম, তিনতলায় উঠার পরে একজন জোরে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে এবং পরক্ষণেই হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। তারপর ওখান থেকে দৌঁড়ে এসে দেখি একজন মাটিতে পড়ে আছে। তার পায়ের অবস্থা খুবই খারাপ। দুই পা'ই ভেঙে গেছে মনে হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্স এসে তাকে রামেকে নিয়ে যায়।
তার এক বন্ধু বলেন, ছেলেটা খুব সহজ সরল ছিল। ও কুরআনের হাফেজ ছিল। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও পড়তো। তবে ওর কিছু আর্থিক সমস্যা ছিল এবং বাসায় সমস্যা ছিল।
অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি বাইরে ছিলাম। ঘটনাটি শোনার পর হলে গিয়ে শুনতে পেলাম তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সে ফার্স্ট ব্লকের চারতলা থেকে লাফ দিয়েছিল। সম্ভবত তার একটা পা ভেঙ্গে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, আমরা ঘটনাটি শোনামাত্রই সেখানে অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছি। তাকে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার পা ভেঙে গিয়েছে, রামেকের ৪নং ওয়ার্ডে অপারেশন চলছে।
প্রতিনিধি/ এজে

